জয় কিংবা ড্র নয়, ইনিংস হার এড়ানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বাংলাদেশের সামনে। তবে সেই লক্ষ্যে নিজেদের সক্ষমতা দেখাতে পারলেন না টাইগাররা। তৃতীয় দিন খেলা ১ ঘণ্টা না গড়াতেই অলআউট হলেন তারা।

এতে ইনিংস ও ৪৬ রানে ঐতিহাসিক ইডেন টেস্ট হারলেন সফরকারীরা। আর ২-০ ব্যবধানে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ জিতল ভারত। দুর্দান্ত পারফরম করে ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরা হয়েছেন ইশান্ত শর্মা।

দ্বিতীয় দিনের ৬ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেন টাইগাররা। মুশফিক ৫৯ ও এবাদত ০ রান নিয়ে নতুন দিনের খেলা শুরু করেন। তবে শুরুটা শুভ হয়নি। ভূমিকাতেই উমেশের শিকার হয়ে ফেরেন এবাদত। রানের খাতায় খুলতে পারেননি তিনি।

পরে আল-আমিনকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মুশি। তবে সাবলীল ছিলেন না। একপর্যায়ে উমেশকে তেড়েফুড়ে খেলতে গিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনিও। ফেরার আগে ১৩ চারে ৭৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

কার্যত তখনই হেরে যায় বাংলাদেশ। বাকি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতার। খানিক পরই আল-আমিনকে (২১) তুলে নিয়ে সেটা সারেন উমেশ। শেষ অবধি ৯ উইকেটে ১৯৫ রান তুলতেই ইনিংস শেষ হয়।

কারণ, আহত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১০ম ব্যাটসম্যান হিসেবেও এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান মাঠে নামতে না পারায় জয়োল্লাসে মাতে ভারত। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেন উমেশ এবং ৪ উইকেট নেন ইশান্ত।

এর আগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেও একই দৃশ্যে আবির্ভূত হয় বাংলাদেশ। ভারতীয় পেসারদের গতির তাণ্ডবে ১৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে তারা।

সূচনালগ্নেই ইশান্তর বলে আউট হন ওপেনার সাদমান ও অধিনায়ক মুমিনুল। কোনো রানের দেখাই পাননি তারা। সেই রেশ না কাটতেই উমেশের বলে শামির হাতে ক্যাচ তুলে দেন মিঠুন।

এরপর ইশান্তর বলির পাঁঠা হন ইমরুল। খাদের কিনারে পড়ে যাওয়া দলকে সেই অবস্থা থেকে টেনে তুলেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দারুণ খেলেন তারা। জমাট বেঁধে যায় তাদের জুটি।

তাতে বিপর্যয়ও কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস! দলকে খেলায় ফিরিয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। পঞ্চম উইকেটে মুশির সঙ্গে ৬৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তিনি।

দলীয় ৮১ রানে উমেশের বলে সিঙ্গেল নেয়ার সময় মাহমুদউল্লাহর ডান পায়ের পেশিতে টান লাগে। চোট নিয়েই ড্রেসিংরুমে ফেরেন তিনি। এর আগে ৭ চারে ৩৯ রান করেন মিস্টার কুল। তার পর দ্রুত ফেরেন মিরাজ। স্পিন অলরাউন্ডারও কাটা পড়েন ইশান্তর ছোবলে।

সতীর্থদের যাওয়া-আসার মিছিলের দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন মুশফিক। পথিমধ্যে ধ্বংস্তূপে দাঁড়িয়ে ক্যারিয়ারে ২১তম ফিফটি তুলে নেন তিনি। দ্বিতীয় দিনের শেষ মুহূর্তে উমেশে চক্ষুশূল হন তাইজুল।

বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের জবাবে ৯ উইকেটে ৩৪৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। এতে ২৪১ রানের লিড নেয় তারা। এর নেপথ্য কারিগর কোহলি। টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৭তম সেঞ্চুরি তুলে ১৩৬ রানে থামেন তিনি।

তাকে যোগ্য সমর্থন জোগান পূজারা ও রাহানে। দুজনই তুলে নেন ফিফটি। যথাক্রমে করেন ৫৫ ও ৫১ রান। বাংলাদেশের হয়ে আল-আমিন ও এবাদত নেন ৩টি করে উইকেট। এছাড়া আবু জায়েদ ঝুলিতে ভরেন ২ উইকেট।

ঐতিহ্যবাহী ইডেনে গোলাপি বলে দিবারাত্রির ঐতিহাসিক টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের ৮ ব্যাটসম্যানই ২ অংকের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি। ০ মারেন তিন ‘ম’ মুশফিক-মুমিনুল-মিঠুন।

সর্বোচ্চ ২৯ করেন সাদামান। আর রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরা লিটন করেন ২৪ রান। ভারতের হয়ে ইশান্ত নেন সর্বাধিক ৫ উইকেট। উমেশ শিকার করেন ৩ উইকেট। আর শামি পান ২ উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *