স্বামী ও সন্তানের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ডেনমার্ক থেকে বাংলাদেশে আসে নাদিয়া নামের ২৯ বছর বয়সী এক তরুণী। স্বামী সন্তানের অধিকার পাওয়ার দাবীতে গত ৩ দিন ধরে কুমিল্লায় সাইফের গ্রামের বাড়িতে অনশন করলে তাকে মারধর ও প্রতারক বলে নির্যাতন করে। এমন অভিযোগ উঠেছে সাইফের পরিবারের বিরুদ্ধে।

নাদিয়া অভিযোগ করে জানান, প্রায় ১০ বছর আগে বিয়ে হয় কুমিল্লা নাঙ্গলকোট উপজেলার আশারকোটা গ্রামের মফিজ মেম্বারের ছেলে সাইফের সাথে। এরই মধ্যে তাদের পরিবারে জম্ম নেয় কণ্যা সন্তান। যার বর্তমান বয়স ৩ বছর। দীর্ঘ ১০ বছরের বিবাহিত জীবনে নাদিয়ার পরিবার ও তার চাকুরীর বেতনের টাকা প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাইফ।

সম্প্রতি সাইফ দেশে আসবে বলে নাদিয়ার থেকে প্রায় ৫০ হাজার ইউরো নিয়ে গত ৩ মাস আগে বাংলাদেশে আসে। এরই মধ্যে নাদিয়ার ফেইসবুক আইডি হ্যাক করে রেখেছে সাইফ। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমু, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় সে। এই সুযোগে সাইফ কুমিল্লা কোটবাড়ি এলাকার অনার্স পড়–য়া এক শিক্ষার্থীকে ডেনমার্ক নিবে বলে কৌশলে বিয়ে করে। কিন্ত বিয়ের ২ মাস পার হওয়ার আগেই ১০ বছর আগে বিয়ে করা ওই ডেনমার্ক তরুণী সাইফের খোঁজে অবস্থান নেয় আশারকোটার সাইফের গ্রামের বাড়িতে। ওই তরুণীকে দেখে সাইফ আত্মগোপনে চলে যায়।

এ ঘটনায় আশারকোটা গ্রামসহ আশে পাশে এলাকায় জানাজানি হলে বিদেশী ওই তরুণীকে দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় জমায়। এরই মধ্যে বিদেশী এই তরুণী সাইফের গ্রামের বাড়িতে আসলে সাইফের পিতা মফিজ মেম্বার লোকজন নিয়ে ওই তরুণীকে মারধর করে। পরে কৌশলে সোমবার রাতে ওই তরুণীকে গ্রামের বাড়ি থেকে নিয়ে আসে কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ^রোডে অবস্থিত হোটেল নুরজাহানে।

এ বিষয়ে ওই তরুণীর অবস্থান বিষয়ে নুরজাহান হোটেল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের কাছে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে সদর দক্ষিণ থানা পুলিশের সহযোগিতায় ৩০৯ নম্বর কক্ষে গিয়ে তরুণীকে পাওয়া যায়। সোমবার রাতে হোটেল নুরজাহানে অবস্থানের পর সাইফের বন্ধু বান্ধব মহলে জানাজানি হলে সেখান থেকে তাকে কৌশলে নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় হোটেল রেডরুফ ইনে।

সেখানে এক সাক্ষাৎকারে ওই তরুণী বলেন, সাইফ আজকে সকালে ডেনমার্ক চলে গেছে, আমাকে ফোন করে বলে আমিও চলে যেতে, তাই আমি আর বাংলাদেশে থেকে লাভ কি ? ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিন ডেনমার্কের ওই তরুণীকে। এ সময় নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশের একটি বিশেষ টিম তাকে নিরাপত্তা দিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়ার কথা জানান এক পুলিশ কর্মকতা। বিষয়টি নিয়ে ওই তরুনী নাঙ্গলকোট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে রেখেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *