স্পোর্টস নিউজ:ব্যাটে বলের লড়াইয়ে ক্রিকেট, তিন ফরমেটে বিভক্ত থাকলেও ক্রিকেট খেলার দীর্ঘতম সংস্করণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় টেস্ট ক্রিকেটকে। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম টেস্ট ক্রিকেট স্বীকৃত পায় ১৫ মার্চ, ১৮৭৭ সালে। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যেকার পাঁচ দিনের এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ধীরে ধীরে বিশ্বে ছড়িয়ে পরে ক্রিকেটের টেস্ট ফরমেটটি।

সাল ২০০০, নভেম্বর ১০ তারিখ। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। টেস্ট ক্রিকেটে সেদিন যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ নামক একটি দেশ। রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে যাত্রা শুরু হয়েছিল শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে।

নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের নেতৃত্বে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ দল। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৫৩.৩ ওভার শেষে নিজেদের সংগ্রহে ৪০০ রান করেছিল টাইগাররা৷ যেখানে বাংলাদেশের পক্ষে আমিনুল ইসলাম বুলবুল করেছিলেন ১৪৫ রান৷ হাবিবুল বাসার ৭১ রান সহ বাকিরাও কম বেশি ব্যাটে বলে নাম লেখাতে চেষ্টা করেছিল। ৪০১ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে আসা ভারত ১৪১.৩ ওভার শেষে নিজেদের সব কটি উইকেট হারিয়ে রান জোগায় ৪২৯টি। যেখানে নাঈমুর রহমান একাই তুলে নেন ৬টি উইকেট। সাথে মোহাম্মদ রফিক ৩টি ও রঞ্জন দান ১টি উইকেট তুলে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

প্রথম টেস্ট ম্যাচে ৪০০ রানের রেকর্ডের জন্ম দিলেও শেষ পর্যন্ত নিজেদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি নাঈমুরের দল। ২য় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৬.৩ ওভার শেষে সব কটি উইকেট হারিয়ে ৯১ রানে অলআউট হয়। হাবিবুল বাসার খালেদ মাসুদ বাদে কারও ব্যাটে কথা বলেনি বললেই চলে। ৬৩রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১টি উইকেটের বিনিময়ে ৬৪ রান করে ম্যাচ জয়ী হয় ভারত।

উনিশ বছর পেরিয়ে আজ বিশ তম বছরে পা রাখতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল এই টেস্ট ক্রিকেটের নগরীতে। এখন অব্দি ১১৫টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল।

ঘরের মাটিতে খেলেছে ৬২টি ম্যাচ। এছাড়াও সফরকারী হিসেবে খেলে ৫৩টি ম্যাচ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, শ্রীলঙ্কা বাদেও টেস্ট ক্রিকেটের বেশ শক্তিশালী দল ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে জাঁকজমকপূর্ণ জয় লাভ করে বাংলাদেশ।

ব্যক্তিগত সাফল্যে অনেক রেকর্ডই বাংলাদেশের দখলে। এক নজরে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের কিছু ব্যক্তিগত রেকর্ড দেখে নেওয়া যাক।

** টেস্ট অভিষেকে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের বিশ্বরেকর্ডটি এখন অব্দি আশরাফুলের। ২০০১ সালে টেস্ট অভিষেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৭ বছর ৬৩ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করেন আশরাফুল।
** সবচেয়ে কম বয়সে ১০ উইকেটের রেকর্ড এনামুল হক জুনিয়রের। ২০০৫ সালে ঢাকায় জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ১২ উইকেট নেয়া ম্যাচের শুরুর দিন এনামুলের বয়স ছিল ১৮ বছর ৪০ দিন।
** টেস্ট অভিষেকে ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি আবুল হাসানের। ২০১২ সালে খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে দশে নেমে ১১৩ রান করেছিলেন এই পেসার।
** একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও হ্যাট্রিকের রেকর্ড সোহাগ গাজীর। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েছিলেন এ ডানহাতি অফস্পিনার।
** টেস্টে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ২০১৪ সালে খুলনায় জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি এবং ম্যাচে ১০ উইকেট নেন সাকিব। ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম ও পাকিস্তানের ইমরান খানের পর তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন সাকিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *