পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ, যা আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ—এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে ।

১৯৭৬ সালের ১৭ই নভেম্বর ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন- সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।
তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সর্বদলীয় ওয়ার কাউন্সিলের উপদেষ্টা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তার সর্বশেষ কীর্তি ছিল- ফারাক্কা লংমার্চ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন মওলানা ভাসানী। বঙ্গবন্ধুও তাকে শ্রদ্ধা করতেন পিতার মতো। শিক্ষা অনুরাগী ও গ্রাম-বাংলার নির্যাতিত মানুষের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন মহান এই নেতা।

তার বুদ্ধিমত্তা আর কলাকৌশল ছিলো অবিস্বরনীয়।
যেমনটি –

সভা আরম্ভ হবার সাথে সাথেই ১৪৪ ধারা জারি করা হলো। পুলিশ এসে মওলানা সাহেবকে (আব্দুল হামিদ খান ভাসানী) একটা কাগজ দিলো।
আমি বললাম, “মানি না ১৪৪ ধারা, আমি বক্তৃতা করবো।” মওলানা সাহেব দাঁড়িয়ে বললেন, “১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। আমাদের সভা করতে দেবে না। আমি বক্তৃতা করতে চাই না, তবে আসুন, আপনারা মোনাজাত করুন। আল্লাহু আমিন।”

মওলানা সাহেব মোনাজাত শুরু করলেন। মাইক্রোফোন সামনেই আছে। আধঘন্টা পর্যন্ত চিৎকার করে মোনাজাত করলেন, কিছুই বাকি রাখলেন না, যা বলার সবই বলে ফেললেন।
পুলিশ অফিসার ও সেপাইরা হাত তুলে মোনাজাত করতে লাগলো। আধঘন্টা মোনাজাতে পুরো বক্তৃতা করে ভাষানি সাহেব সভা শেষ করলেন। পুলিশ ও মুসলিম লীগ ওয়ালারা পুরো বেয়াকুফ হয়ে গেলো।
(অসমাপ্ত আত্মজীবনী (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *