ভারতের উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা ৬৬ বছর বয়সী মাওলানা আসাদ রাজা হোসেনি। তার পরিবারের দাবি, পুলিশ তাকে নিয়ে ন’গ্ন করে নি’র্যা’তন করেছে। সেই অপমান থেকে এখনও আত্মীয়-স্বজনকেও নিজের মুখ দেখাতে চান না তিনি।

ঘুমের মধ্যে কেবল কাঁদেন। জানা যায়, পুলিশ মুজাফফরনগর শহরে এতিম শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত সাদাত হোস্টেল থেকে প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে গেছে। এরা সকলেই মাওলানা আসাদ হোসেনের শিক্ষার্থী।

স্থানীয় কং’গ্রেস নেতা ও সাবেক এমপি সাইদুজ্জামান সাঈদের ছেলে সালমান সাঈদ বলেন, আট’ককৃ’ত শিক্ষার্থীদের নি’র্যা’তন করা হয়েছে। তাদেরকে টয়লেটে যেতে দেওয়া হয়নি। মা’রের চোটে অনেকের র’ক্তপায়’খা’নাও হয়েছে।

মাওলানা আসাদ এই সাদাত মাদ্রাসায় পড়ান। তিনি ওই এতিমখানার ত’ত্ত্বাবধা’য়ক। তাকেও পুলিশ ব্যাটন দিয়ে পি’টিয়েছে। ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভারতের নয়া নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বি’ক্ষো’ভ চলাকালে সহিংসতার পর তাকে এতিমখানা থেকে টে’নেহিঁচড়ে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। তিনি নিজের পরিবারকে বলেছেন যে, অ’ন্ধ’কার প্রকোষ্ঠে তাকে ২৪ ঘণ্টা আট’কে রাখা হয়েছে।

সেখানে তীব্র ঠান্ডায় তাকে ন’গ্ন করে পেটানো হয়েছে। ভী’ষণ শীতে ওভাবেই তিনি রাত কাটিয়েছেন। পাশের প্রকোষ্ঠে ১৪ থেকে ২১ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদেরও ‘নি’র্যা’তন করা হয়েছে। রাতভর তাদের পে’টানো হয়েছে। তাদের ছেড়ে দেওয়ার পর তাদের সঙ্গে যেসব প্রতিবেশী কথা বলেছেন। সাঈদ বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীকে জো’র করে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতেও বাধ্য করা হয়েছে।’

মাওলানা আসাদকে পশ্চিম উত্তর প্রদেশে অনেকেই চেনেন। ২১ ডিসেম্বর স্থানীয় নেতাদের চাপে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তার এক আ’ত্মীয় বলেন, ‘শনিবার রাতে এক পুলিশ আমাদের ফোন করে জানান যে, মাওলানাকে ছেড়ে দেওয়া হবে, আমরা যেন তার জন্য কা’পড়চো’পড় নিয়ে যাই। আমরা এ কথা শুনে অবাক হয়ে যাই! কাপড় কেন লাগবে! তবুও তার কথা শুনে কুর্তা আর পায়জামা নিয়ে যাই। আ’ধাঘ’ণ্টা পর তাকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে পুলিশ স্টেশন থেকে বের হতে দেখি।

তাকে দু’ জন পুলিশ সদস্য কাঁধে করে ধরে আনছিল। নিজের মাথাটা পর্যন্ত তিনি উঁচু করতে পারছিলেন না। আমরা তাকে রীতিমতো পাঁজাকোলা করে গাড়িতে ঢুকিয়েছি।’ মাওলানা আসাদের হাত-পা সহ সারা শরী’রে নি’র্যা’তনের চি’হ্ন পাওয়া গেছে। ওই আ’ত্মী’য় বলেন, মানসিকভাবে তিনি পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছেন। পুলিশ তাকে এত মে’রে’ছে তার মনে হয়েছে মৃ’ত্যুই ভালো ছিল।

এত অপমান করা হয়েছে যে, এখন তিনি আ’ত্মীয়-স্বজনের কাছে নিজের চে’হারা দেখাতে চাচ্ছেন না। ঘুমের মধ্যেও ঢুঁকরে কেঁদে ওঠেন। এ ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ উত্তর দেননি বা কথা বলতে চাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *