এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার পর ঢাকার বনানী থানায় নেওয়া হয়েছিল বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরীর ছেলে আরাজ বি চৌধুরীকে; পরে ওই কর্মকর্তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ছাড়া পান তিনি।

বুধবার রাতে আরাজ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে বনানীতে একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেওয়ার পর এই ঘটনা ঘটে। ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় পর্যন্ত যেতে হয়েছে মাহি বি চৌধুরীকে। তিনি বারবার ক্ষমা চাইতে বললেও মদ্যপ ছেলে বমি করতে করতে অস্থির হয়ে পড়েন। এসময় তার মুখ থেকে বাংলা ইংরেজি মিশিয়ে অশ্লীল সব গালাগাল শোনা যায়!

আরাজের বাবা মাহী সংসদ সদস্য। তার দাদা এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বিকল্প ধারার সভাপতি।

জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বনানী কবরস্থানের দিক থেকে এয়ারপোর্ট রোডে বের হওয়ার সময় একটি সিএনজিকে খয়েরী রং-এর গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ ২৮-০৮৩৬) ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দায়িত্ব রত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলমগীরের পায়ে আঘাত করে। এ সময় গাড়িটির চালকের আসনে ছিলেন মাহির ছেলে।

সার্জেন্ট আরাজ বি চৌধুরীর গাড়ি থেকে বের হতে বললে সে মাতাল অবস্থায় বের হয়ে আলমগীরের শার্টের কলার ধরে টান দেয়। সেইসঙ্গে সার্জেন্ট আলমগীরকে এলোপাথারি কিলঘুষি মারতে থাকে। মারতে মারতে চিৎকার করে বলতে থাকে, তুমি জানো আমি কে? হু ইজ মাই ড্যাড? আমি মাহী বি চৌধুরীর ছেলে।

অবস্থা বেগতিক দেখে ট্রাফিক পুলিশের অন্য সদস্যরা বনানী থানার কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করেন।

কিছু সময় পর থানা থেকে একটি পুলিশের ভ্যান এসে মাহির ছেলে ও তার সাথে থাকা বন্ধুকে আটক করে বনানী থানায় নিয়ে যায়। তাদের সেই গাড়িটিও নেয়া হয় থানায়। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে থানায় আসেন স্বয়ং মাহি বি চৌধুরী। এর মাঝেই হাসতে হাসতে থানার ডিউটি অফিসারের সামনেই হড় হড় করে বমি করে দেয়। মাহি বি চৌধুরী থানার ওসিকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তার ছেলে ভুল করে ফেলেছে এ জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থী। এর পরে থানার ওসি সার্জেন্ট আলমগীরকে ডেকে নেন। এর পর মাহি তার কাছে ক্ষমা চান। এরপর ওসির কথায় লিখিতভাবে সেই সার্জেন্ট ক্ষমা প্রদান করেন।

নাটকের এই পর্যায়ে ছেলেকে সেই সার্জেন্টের কাছে মাফ চাইতে বলেন মাহি। কিন্তু কে শোনে কার কথা! ক্ষমা চাওয়ার বদলে উল্টো বাংলা-ইংরেজি মিশিয়ে অশ্লীল গালাগাল শুরু করেন বি চৌধুরীর ছেলে। গালাগাল করতে করতেই ওসির কক্ষ থেকে বের হয়ে আবারও বমি করতে থাকেন।

এই ঘটনা দেখে মাহি বি চৌধুরী আবেগাপ্লুত হয়ে বলতে থাকেন, ‘বাবা তোমাকে কে কি খাইয়েছে আমাকে বল! তোমার পেটে কী হয়েছে। তোমার কি কিছু হয়েছে? আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।’

এরপর মাহি বি চৌধুরী তার ছেলে আর ছেলের বন্ধুকে নিয়ে হাসপাতালে যাবেন বলে দ্রুত থানা ত্যাগ করেন। অবসান হয় নাটকের!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *