গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় মরাশ জামিয়াতুল মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষকের কাপড় রাখার ওয়ারড্রবের (কেবিনেটের) ভেতর থেকে ওই মাদরাসার প্রধান শিক্ষকের চার বছরের শিশুপুত্র মো. আদিলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) রাতে স্থানীয় মরাশ জামিয়াতুল মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক মো. জোনায়েদ আহমেদের কেবিনেটের ভেতর থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

 এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলো- মাদ্রাসার শিক্ষক মো. জোনায়েদ আহমেদ (৩০) ও মসজিদের মোয়াজ্জিন খায়রল ইসলাম (২৫)। জোনায়েদ আহমেদ (৩০), হাবিগঞ্জ জেলার রাখাইন উপজেলার তেগুরিয়া গ্রামের মৃত ওয়াহব আলীর ছেলে, খাইরুল ইসলাম (২৫) একই এলাকার জফু মিয়ার ছেলে (২৫)। 

নিহত আদিল মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মুফতি জোবায়ের আহমেদের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ধলাসিয়া এলাকায়। 
মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মুফতি জোবায়ের আহমেদ জানান, চারদিন আগে ওই মাদরাসার মসজিদের মোয়াজ্জিন খায়রুল ইসলামের একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে তিনি মাদরাসা শিক্ষক  জোনায়েদ আহমেদকে সন্দেহ করেন।

এ ব্যাপারে মোয়াজ্জিন খায়রুল মাদরাসার প্রধান শিক্ষকের কাছে জোনায়েদের বিরুদ্ধে নালিশ করেন। পরে প্রধান শিক্ষক ঘটনার দিনই জোনায়েদকে ডেকে শাসন করেন। বুধবার বিকালে শিক্ষক মুফতি জোবায়ের আহমেদের শিশু পুত্র আদিল মাদরাসার পাশেই মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে ছেলেকে কোথায়ও না পেয়ে মসজিদের মাইকে ছেলে হারানোর মাইকিং করা হয় এবং নিহতের স্বজন ও গ্রামবাসী গিয়ে মাদরাসার পুকুরসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে। 
এসময় শিক্ষক জোনায়েদ ও মুয়াজ্জিন খায়রুলের আচরণ রহস্যজনক মনে হলে এলাকাবাসী তাদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার কথা স্বীকার করেন জোনায়েদ। পরে চাবি নিয়ে মাদরাসার সহকারী শিক্ষক জোনায়েদ আহমেদের কক্ষে থাকা কেবিনেট থেকে ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় এবং তাদের দুইজনকে থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। 

কালীগঞ্জ ওসি এ.কে.এম মিজানুল হক জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই শিক্ষক জোনায়েদ আহমেদ ও ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মসজিদের মোয়াজ্জিন মো. খাইরুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। 

কালীগঞ্জ-কাপাসিয়া সার্কেলের এডিশনাল এস.পি পঙ্কজ দত্ত জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে লাশ উদ্ধার করা হয় এবং বৃহস্পতিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত রয়েছে। এ ব্যাপারে বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তাকে অপমান করার প্রতিশোধ নিতেই জোনায়েদ ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের শিশুপত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *