অনেকেরই ধারণা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানে মৃত্যু। মানুষের এই ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করলেন সিলেটের শেরওয়ান চৌধুরী ও তার পরিবারের অন্যান্য তিন সদস্য। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই পরিবারের চার সদস্য এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। সিলেটের জকিগঞ্জে মুল বাড়ী হলেও যুক্তরাজ্যের ক্রয়ডন এলাকায় বসবাস করেন তারা।  

জানা গেছে, ক্রয়ডনের নরবারী এলাকার কাউন্সিলর শেরওয়ান চৌধুরী। লেবার পার্টি থেকে ওই এলাকায় চার বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। যুক্তরাজ্যের মধ্যে তিনিই একমাত্র জকিগঞ্জের কাউন্সিলর। 

গত ২৯ মার্চ একই দিনে তার পরিবারের মোট চার সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিনি ছাড়াও  করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন তার স্ত্রী রহিমা চৌধুরী, পুত্র সফওয়ান চৌধুরী ও পুত্রবধূ ফাহমিদা চৌধুরী। তাদের সবার শরীরে করোনার বেশ কিছু উপসর্গ দেখা দিলে তারা ফোন করেন সেদেশের স্বাস্থ্য বিভাগে (ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস)। 

স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তব্যরতরা তাদের জানান, গলায় কাশি, গায়ে চুলকানী, জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা, রক্তপাত হওয়া, টেলিভিশন দেখতে ভালো না লাগা সহ কয়েকটি উপসর্গ সময়ে সময়ে বাড়তে পারে। এসব উপসর্গ দেখা দিলে ধরে নিতে হবে করোনা পজেটিভ হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে এসব উপসর্গের সবক’টি তাদের শরীরে দেখা দেয়।  

ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস তাদেরকে জানায়, ঘরে বসে তারা চিকিৎসা নিতে পারেন। হাসপাতালে তাদের ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা পরপর প্যারাসিটামল সেবন করা সহ কয়েকটি পরামর্শ দেয়া হয়েছিল তাদের। 

কাউন্সিলর শেরওয়ান সিলেটভিউকে জানান, প্যারাসিটামলের পাশাপাশি তারা গরম পানিতে (সহ্য অনুযায়ী) মধু, লেবু মিশিয়ে পান করতেন দৈনিক ৫ থেকে ৬ বার। সাথে কিছু আদাও দিতেন। এছাড়া গরম পানির সাথে ভিক্স মিশিয়ে নাক দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতেন প্রতিদিন বেশ কয়েকবার।  তাদের সবাই কালোজিরাও চিবিয়ে খেতেন প্রতিদিন। 

তিনি জানান, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তাদের জানানো হয়েছিল যদি রক্তপাত কিংবা শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় তাহলে তাদেরেকে হাসপাতাল ভর্তি হতে হবে। কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যে তাঁর পুত্র ও পুত্রবধূ সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাদের দু’জনের বয়স ছিল ২৫ বছর। 

কিন্তু তিনি ও তার স্ত্রী করোনাভাইরাসকে জয় করতে সময় লেগেছে কিছুটা বেশি। তাদের একজনের  বয়স ছিল ৬৪ বছর এবং অপরজনের বয়স ৫৬ বছর।
সিলেটভউকে কাউন্সিলর শেরওয়ান জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে মনকে শক্ত করতে হবে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এই নয় যে মৃত্যু হয়ে যাবে। মনকে শক্ত করার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে বেশি। এবং পদ্ধতিগুলো নিয়ম মত মেনে চললে ভালো হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। 

তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে বলে জানান তিনি। তার পরিবারের সবাই নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে সুস্থ হয়ে ওঠেন। 

সূত্র:সিলেটভিউ২৪ডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *