প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয় আমাদের দেশে খাবার সংকট নাই, কিন্তু কই আমাদের ঘরেতো এখনো খাবার আইলো না, মুখ দেখি-দেখি খাবার দিলে আমরা গরীবরা বাঁচতাম কেমনে? আমরা কারো কাছ থেকে সাহায্য পাইনি, কেউ খোঁজও নেয়‌নি আমা‌দের। ভোট আইলে হাত-পাও ধ‌রে, এখন তারার খবর নাই- সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের ধোপাখালি এলাকার মধ্যবয়সী এক শ্রমজীবী নারী বললেন এমন কথা। করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত কোনো খাদ্য সহায়তা পাননি বলে জানান তিনি।

করোনাভাইরাসে অসহায় ও দরিদ্র এবং শ্রমজীবী মানুষদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী প্রদানে সরকারের নির্দেশ থাকলেও সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের উত্তর ষোলঘ‌রে (‌ধোপাখা‌লি) নিম্ন আ‌য়ের মানুষের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোন খাদ্য সহায়তা প্রদান করেনি এখনো পৌর কর্তৃপক্ষ। চলমান ক‌রোনা পরিস্থিতিতে বাইরে কোন কাজ না থাকায় ও বিভিন্ন ওয়ার্কশপ এবং দোকানপাট বন্ধ থাকা এ এলাকার বেশ কিছু পরিবার কষ্টে জীবনযাপন করছে।

সরজমিনে, সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের ধোপাখালি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহরের অন্যান্য এলাকার চে‌য়ে অনুন্নত এ অঞ্চল। যদিও এলাকা‌টি বর্ধিত পৌর এলাকায় নয়, পুরাতন পৌর এলাকায় অবস্থিত। সরু সড়কের মহল্লায় প্রায় শতাধিকের উপ‌রে পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে অনেক নিম্ন আ‌য়ের পরিবারেরও বসবাস। যারা দিনমজুরের কাজ করে জীবন চালান। ক‌রোনা ভাইরাসে অন্যান্য এলাকার মত এই মহল্লার মানুষও কর্মহীন। সরকারি নির্দেশনার কারণে ঘর থেকে বের হ‌তে পারছে না। অভাব অনটনে দিন কাটছে তা‌দের। জেলা প্রশাসন, পৌরসভাসহ কেউ তা‌দের খাদ্য সহায়তা দেয় নি।

রিকশা চালক আলমগীর হোসেন বলেন, সরকারের ছুটি মেলা দিন ওইছে কিন্তু এখনো ঘরে কেউ এ কেজি চালও নিয়ে আসে নাই। আমার বাচ্চাটা প্রতিবন্ধী তারেও ঠিকমতো খাওন দিতে পারি না। রিকশা নিয়া বার হইলে পুলিশের কথা শুনা লাগে। টিভিতে শুনছি দেশে খানির অভাব নাই কিন্তু কই আমাদের ঘরে তো খাওনই নাই। ভোটের সময় ঠিকই মুখে ফুল ফোটে কামের সময় দেখা নাই।

শ্রমজীবী লোকমান মিয়া বলেন, আমরা খাবার পাই নাই এখনো তবে শুনছি আশে পাশে কয়েকটি এলাকায় দিয়েছে তাহলে আমরা কি দোষ করলাম খাবার নাই কেন আমাদের। আমাদের কেনো খাবার থেকে বঞ্চিত করা হইতেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মমতা ইসলাম মম বলেন, অসহায় একটি পরিবারেও এখন পর্যন্ত পৌঁছায়নি কোনো দপ্তর থেকে কোন প্রকার খাদ্য সহায়তা। নিম্ন আ‌য়ের মানুষরা বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভ্যান, রিকশা, অটো চালক ও দিনমজুর পরিবারগুলো হয়ে গেছে কর্মহীন। কর্মহীন হয়ে গেছে অন্যের বাসায় খেটে খাওয়া কাজের বোয়ারাও। এদের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব কার বা কাদের?

এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান তা‌রেক বলেন, স্থানীয় নিম্ন আ‌য়ের মানুষরা আমা‌কে জানিয়েছেন, তারা খাদ্য সহায়তা পান নি। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা তা‌দের খোঁজখবর নিচ্ছেন না। বিষয়‌টি পৌর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র না‌দের বখতকে একাধিকবার মোবাইলে যোগা‌যোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

সূত্রঃ সিলেটটুডে ২৪ ডটকম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *