বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আজিজ মহল্লার বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাক। করোনারা উপসর্গ নিয়ে রবিবার ভোরে পরীক্ষা করাতে যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। তবে দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে সিরিয়িাল না পেয়ে সকাল ৯টার দিকে বাসায় ফেরার পথে শাহবাগে মোড়ে মৃত্যু হয়।

বৃদ্ধ মানুষ তাই সঙ্গী ছিল দুই ছেলে। তাদের সামনেই রাস্তায় বাবার এমন মৃত্যু পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্ঠুর ছবি। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহ্বল হয়েছিলেন তারা। বৈশাখের তপ্ত রোদ নির্লজ্জভাবে আলিঙ্গন করেছে তাদেদর বাবার মৃতদেহ।

বড় ছেলে জানায়, স্ট্রোক করেছেন। ছোট ছেলে ইমনের দাবী, মাস ছয়েক ধরে ফুসফুসের জটিলতা ভুগছিলেন বাবা। কয়েকদিন ধরে জ্বর। তাই এসেছিলেন টেস্ট করাতে।

রাস্তায় পড়ে যখন ধরফর করছেন, তখন বাবাকে বাঁচাতে বড় ছেলে ছুটে গিয়েছিলেন পাশেই থাকা বারডেমের জরুরি বিভাগে। পাত্তাই দেয়নি তারা। লাশ ঢাকতে একটা কাপড় চেয়েও মেলেনি। অথচ পেশাগত জীবনে রাজ্জাক ছিলেন কাপড় ব্যবসায়ী। পরে মরদেহ নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেলে।


এদিকে পুলিশ জানান, ছয় মাস ধরে ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন কাপড় ব্যাবসায়ী আবদুর রাজ্জাক।

নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) পরীক্ষার নমুনা দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) উপচেপড়া ভিড়। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও নমুনা দিতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেকেই।

বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ বলছে, ভোগান্তি কমাতে টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। তবে এর মধ্যেই দ্বিগুণ করা হয়েছে চিকিৎসকের সংখ্যা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনে সাড়ে ৩০০ টোকেন দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিদিন নমুনা দিতে যান হাজারের বেশি মানুষ।

লাইনে দাঁড়ানোর সময় সামাজিক দূরত্ব না মানায় সংক্রমণেও ঝুঁকি বাড়ছে। তাই বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানায়, ভোগান্তি কমাতে এরই মধ্যে চিকিৎসক দ্বিগুণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *