বিয়ানীবাজারে করোনা আক্রান্ত যুবকের সংস্পর্শে আসায় স্বেচ্ছায় সঙ্গনিরোধ (হোম কোয়ারেন্টাইন) হলেন ডা. শিব্বির আহমদ সোহেল। মঙ্গলবার (২৬ মে) রাত ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এমন ঘোষণা দেন তিনি। ওই পোস্টে তিনি তাঁর পরিচালনাধীন প্রতিষ্ঠান বিয়ানীবাজার ডায়বেটিস এন্ড হরমোন সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও উল্লেখ করেছেন।
ফেসবুকে প্রস্কাশিত ওই পোস্ট থেকে জানা গেছে, গত ২০ মে ডা. শিব্বির আহমদ সোহেলের বিয়ানীবাজার ডায়বেটিস এন্ড হরমোন সেন্টারে করোনা উপসর্গ নিয়ে পরামর্শের জন্য আসেন মনোয়ার হোসেন (৩২) নামের এক যুবক। ওই যুবকের বাড়ি বড়লেেখা উপজেলার গল্লাসাঙ্গন গ্রামে। পরে এ চিকিৎসক ওই যুবকের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় তাকে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠান। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীলরা ওই যুবকের নমুনা সংগ্রহ করে করে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের ল্যাবে প্রেরণ করেন। সোমবার রাতে ওই যুবকের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এই খবরটি শোনার পর ডা. শিব্বির আহমদ সোহেল স্বেচ্ছায় পৌরশহরের দাসগ্রামস্থ বাসায় আইসোলেশনে যান এবং তাঁর প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ ঘোষণা দেন।
ফেসবুকের ওই পোস্টে ডা. শিব্বির আহমেদ সোহেল আরও উলেখ করেন, এ বিষয়টি তিনি বিয়ানীবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের দায়িত্বশীলদের অবগত করেছেন। শোনার পর হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা বুধবার তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠাবেন বলে আশ্বস্ত করেন। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ওই পোস্ট তিনি সকলের নিকট দোয়া কামনা করেছেন।
এদিকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদীপ বিশ্বাস জানান, করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়া যুবক মনোয়ার হোসেনকে বর্তমানে বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মোতাবেক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও তাঁর সংস্পর্শে আসা সকলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করা হবে। তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন তাঁর বাড়ি লকডাউন করেছে।
প্রসঙ্গত, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ি এ পর্যন্ত বিয়ানীবাজার থেকে মোট ১৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করা হয়। এর মধ্যে ১৪৮ জনের ফলাফল এসেছে। এর মধ্যে ১৪১ নেগেটিভ ও ৭ পজেটিভ রিপোর্ট রয়েছে। করোনা পজেটিভ নতুন দুজনকে নিজেদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়া প্রথম ৫জনই সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। এখনো ২০টি নমুনার ফলাফলের এখনো অপেক্ষমাণ রয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৬২জন সন্দেহভাজন এখনো হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এদের অধিকাংশই বাইরের জেলা থেকে আগত নারী-পুরুষ রয়েছেন।