
▪আরে ভাই, বয়স তো এখনও ফুরায় নাই। আরেকটু বয়স হোক তারপর দাঁড়ি রাখবো।
▪হজ্জ করে একবারে দাঁড়ি রেখে দিবো।
▪আমি তো দাঁড়ি রাখতে চাই কিন্তু বউ রাজি না।
▪দাঁড়ি রাখা তো সুন্নাত। না রাখলেও গুনাহ হবে না।
▪দাঁড়ি রাখলে চাকরির ক্ষতি হতে পারে।
“আপনি কেন দাঁড়ি রাখেননি?” এটা জিজ্ঞাসা করলে মোটামুটি সবাই এমন উত্তরই দিয়ে থাকেন।
দাঁড়ি রাখা বা না রাখা নিয়ে বাঙালি সমাজ মোটামুটি চার ভাগে বিভক্ত।

প্রথম দল যারা দাঁড়ি রেখেছেন (আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তাঁদের উত্তম প্রতিদান দান করুন)
দ্বিতীয় দল যারা দাঁড়ি রাখতে চান কিন্তু কোনো কারণে রাখতে পারছেন না (আল্লাহ তাদের সাহায্য করুন)
তৃতীয় দল যারা বর্তমানে নয় কিন্তু ভবিষ্যতে অর্থাৎ বৃদ্ধ বয়সে দাঁড়ি রাখতে চান (আল্লাহ তাদেরকে ইসলামের সঠিক বুঝ দান করুন)
চতুর্থ দল যারা দাঁড়ি রাখতেই চান না (আল্লাহ তাদের হেদায়াত দান করুন)
●দাঁড়ি রাখাটা কি খুব জরুরী..?
হ্যাঁ দাঁড়ি রাখাটা খুবই জরুরী। দাঁড়ির দৈর্ঘ্য নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও চার মাযহাবের সকল ইমামই বলেছেন দাঁড়ি মুন্ডন বা শেভ করা হারাম। [ইখতিয়ারাতুল ফিকহিয়্যাহ (পৃ. ১০) আলাউদ্দীন আলবা’লী প্রণীত। আল-ফুরু’ (১/২৯১) ‘ইবনু মুফালিহ’ প্রণীত এবং মারাতীবুল ইজম’, রাদ্দুল মুহতার-(২/১১৬)]
●কেন হারাম?
-আল্লাহর নির্দেশকে অমান্য করা।((ইবনে জারির আত তাবারি, ইবন সা’দ ও ইবন বিশরান কর্তৃক নথিকৃত। আলবানি (রহ.) একে হাসান বলেছেন। দেখুন আল গাযালির ফিক্বহুস সিরাহ ৩৫৯ পৃষ্ঠা)

-রাসুল (সা.) এর নির্দেশকে অমান্য করা [বুখারী (৫৮৯২), মুসলিম (২৫৯)]
-আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করা(সূরা নিসা-১১৯)
-নারীর অনুকরণকারীকে রাসুল (সা.) এর অভিশাপ [বুখারী (৫৮৮৫), তিরমিযী (২৯৩৫)]
-অমুসলিমদের অনুকরণ করা [মুসলিম (২৬০)]
●দাঁড়ি রাখায় যে লাভ..
আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) কোনো নির্দেশ দিয়েছেন আর তাতে কোনো কল্যাণ থাকবে না, তাতো অসম্ভব। দাঁড়ি রাখার কিছু সুফল খোঁজার চেষ্টা করা যাক।
-লম্বা দাঁড়ি ও খাটো গোঁফ, এটা একজন মুসলিমের পরিচয়। আপনাকে এমন অবস্থায় দেখলে যে কেউই বুঝতে পারবে যে আপনি একজন মুসলিম।
-যে লোকটার দাঁড়ি আছে সে বেশি সালাম পায়। অধিক সালাম আদান প্রদানের ফলে তার জীবনে শান্তি বর্ষিত হয়।
-দাঁড়ি রাখার ফলে আপনি বিভিন্ন হারাম কাজ থেকে বিরত থাকতে পারেন।
-দাঁড়ি আপনার চেহারার সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিবে ইনশাআল্লাহ।
-দাড়ি রাখার ফলে বিভিন্ন দৈহিক উপকারিতা তো রয়েছেই।
যে ব্যক্তি দাঁড়ি মুন্ডন করে তার দিকে তাকাতে রাসুল (সা.) তাকাতে ঘৃণাবোধ করেছেন। (ইবনে জারির আত তাবারি, ইবন সা’দ ও ইবন বিশরান কর্তৃক নথিকৃত। আলবানি (রহ.) একে হাসান বলেছেন। দেখুন আল গাযালির ফিক্বহুস সিরাহ ৩৫৯ পৃষ্ঠা)
আল্লাহ না করুন যদি আপনার দাড়ি ছাড়া অবস্থায় মৃত্যু হয় আর হাশরের ময়দানে রাসুল (সা) আপনার দিক থেকে তাকাতে ঘৃণাবোধ করেন তখন আপনার জন্য আল্লাহর কাছে শাফা’আত চাইবেন কে? তাই মৃত্যু আসার আগেই আমরা দাঁড়িকে লম্বা করি এবং গোঁফকে খাটো রাখি।
আল্লাহ আমাদের ইসলামকে ভালোভাবে জানা ও বোঝার তৌফিক দিন।
© তানভীর বিন শহীদ