সম্পাদকীয় :: রক্ত ও অশ্রুঝরা শোকাবহ ১৫ আগস্ট। আজ জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির শোকের দিন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী।

১৯৭৫ সালের এই দিন সঙ্ঘটিত হয় ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়। দেশি-বিদেশী চক্রান্তে কুচক্রী মহল স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি; তারা হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে।

এছাড়াও ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ আবু নাসেরকে হত্যা করে ঘাতকরা। বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ছুটে আসা নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককেও হত্যা করে বিপদগামী সেনাসদস্যরা।

বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মনির ধানমন্ডির বাসায় হামলা চালিয়ে তাকে, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা করে তাকে ও তার কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় রেন্টু খানকে হত্যা করা হয়।

বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং নিকটাত্মীয়সহ ২৬ জনকে ওই রাতে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘাতকরা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় তারা প্রাণে বেঁচে যান।

বাঙালির জন্য জীবন উৎসর্গ করা চিরসংগ্রামী মানবতাবাদী বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে নতুন উদ্যমে এগিয়ে নেওয়ার চূড়ান্ত সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, তখনই তাকে হত্যা করা হয়।

সেদিনের ওই সময়ে বাংলাদেশের বাতিঘরের পবিত্র আলো নিভিয়ে দেশকে অন্ধকারের পথে ঠেলে দেয় একদল কুলাঙ্গার। যে মানুষটি পরম মমতায় বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য অবিরাম লড়াই করে গেছেন সেই মানুষটিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ক্ষতবিক্ষত করা হয় পুরো বাংলাদেশকে।

কামরুল হাসান মুন্না ,, সম্পাদক : বৈরাগীবাজার নিউজ ডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *