সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়ন এ অবস্থিত “জাঙ্গালহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়”। বিদ্যালয়টি ১৮৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

যে স্কুলে আমার দুজন পিটি মেট প্রিয় বন্ধু গোলাপগঞ্জ উপজেলার পরিচিত মুখ মাহবুবুর রহমান শিবলু ও রিবলু মিয়া কর্মরত। সেই সুবাদে আজ থেকে ৩/৪ বছর আগে এই স্কুলে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল।সেই সময় স্কুলটির যে জরাজীর্ণ অবস্থা দেখেছিলাম তা দেখে অনেক হতাশ হয়েছিলাম।

গত নভেম্বরের ০৮ তারিখে আবারও বন্ধুর সাথে তার স্কুলে বেড়াতে যাই। কিন্তু গিয়ে দেখি সব কিছুতে যেন চমক। জরাজীর্ণ ভাঙ্গা আধাপাকা ভবনটি মাননীয় নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি মহোদয়ের বিশেষ বরাদ্দে চকচকে হয়ে উঠেছে।

পাকা ভবনটির দেয়ালে দেয়ালে তুলির আচড়ে আকা আলপনা আর ছবি দেখার মতো।

শিক্ষার্থীরা যাতে দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হতে পারে সে জন্য মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার নামে দুটি ফটো গ্যালারি স্থাপন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের জন্য হাত ধোয়ার বেসিন আর আর স্কুলের আঙ্গিনায় ফুলের বাগান যেন মন ছুঁয়ে যায়।

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো স্কুলের যে রাস্তা ভাঙ্গাচুরা ছিল সেটি আজ পাকা রাস্তায় রুপান্তরিত হয়েছে। এলাকার লন্ডন প্রবাসী দানবীর অমর চৌধুরী’র অনুদানে তৈরী দৃষ্টিনন্দন স্কুলের গেইট স্কুলটির সৌন্দর্য যেন আরো বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। কি নেই স্কুলটিতে! যে দিকেই থাকাবেন শুধু সৌন্দর্যের ছোঁয়া।

স্বল্প সময়ে প্রধান শিক্ষক শ্যামলী দে (চঃদাঃ) এবং সহকারি শিক্ষকদের কাছ থেকে এ সব উন্নয়নের পেছনের অনেক গল্প শোনালেন। এ সব উন্নয়নের পেছনে যে সব পরিকল্পনা ম্যাজিক এর মতো কাজ করেছে তা হলো-

)শিক্ষকবৃন্দের সাথে ম্যানেজিং কমিটি,অভিভাবক এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সুসম্পর্ক।

)এলাকার রাজনীতিবিদদের আন্তরিক সহযোগীতা।

) স্কুলের সকল উন্নয়ন মুলক কাজে অভিভাবক সহ সকলের সম্পৃক্ততা।

)এলাকার দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগীতা।

)শিক্ষকদের সকল কাজে শিক্ষার্থী ,শিক্ষক অভিভাবকদের আন্তরিক সহযোগীতা।

)স্কুলের বর্তমান সভাপতি হিরা মিয়া ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কথা না বললেই নয়।

)বিদ্যালয়ের সকল উন্নয়নকাজে সহকারি শিক্ষকদের পরামর্শ গ্রহন।

)স্কুলের জন্য সরকারের সকল বরাদ্ধের সুষ্ঠু পরিকল্পিত বাস্তবায়ন।

)বিদ্যালয় রক্ষণাবেক্ষণ পরিচর্যার জন্য দপ্তরি কাম প্রহরী বাপ্পু মিয়ার আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন।

উপরোক্ত কারনে এমন সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে বলে শিক্ষকরা মনে করেন।

বিদ্যালয় নিয়ে শিক্ষকদের আগামি পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন-বিদ্যালয়ের সামনে বিদ্যালয়ের কিছু অসমতল জায়গা রয়েছে যেখানে মাটি ভরাট করে বিদ্যালয়ের শোভা বর্ধনের জন্য বাগান করার পরিকল্পনা ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বিদ্যালয়ে মাতৃভাষা,স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের প্রতীক “শহীদ মিনার” নির্মানের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে বলে শিক্ষকরা জানান।এ জন্য শিক্ষকরা এলাকার গন্যমান্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।

আমির উদ্দিন, সহকারী শিক্ষক হাজারীশাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বিয়ানীবাজার, সিলেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *