সিলেটের কানাইঘাটে ভাই ভাতিজার হাতে নজরুল ইসলাম নজু (৫০) নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। তিনি উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের লোহাজুরী গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে।
গত শুক্রবার ( ৬ নভেম্বর ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে আপন ভাই-ভাতিজা ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন নজরুল।
এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার দায়ে নিহতের ভাই সহ ৩ জনকে আটক করেছে কানাইঘাট থানা পুলিশ।
অভিযোগে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পাওনা টাকা নিয়ে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।
নিহত নজরুল ইসলাম নজুর পুত্র হত্যা মামলার দরখাস্তের বাদী দেলোয়ার হোসেন (২৬) জানান, জমিজমা ও পাওনা টাকা নিয়ে তার পিতার সাথে আপন চাচা নুরুল ইসলাম (৬০) ও চাচাতো ভাই আলা উদ্দিন (২৪) এর সাথে বিরোধ চলে আসছিল।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় লোহাজুরী মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে নজরুল ইসলাম নজু তার ভাতিজা আলা উদ্দিনের কাছে পাওনা ১০ হাজার টাকা চাইলে আলা উদ্দিন চাচা নজরুল ইসলাম নজুকে তার বাড়ী মিকিরপাড়া গ্রামে যেতে বলে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে নজরুল ইসলাম নজু ভাতিজা আলা উদ্দিনের বাড়ীতে টাকা আনার জন্য গেলে সেখানে তাকে আটক করে রাখা হয়।
একপর্যায়ে আপন বড় ভাই নুরুল ইসলাম, ভাতিজা আলা উদ্দিন ও ভাড়াটিয়া কতেক লোকজনকে নিয়ে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নজরুল ইসলাম নজুর দুই পায়ে একাধিক কোপ সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর জখম করে।
পরে লোহাজুরী,মিকিরপাড়া রাস্তার কুটন মিয়ার বাড়ির পাশে মৃত ভেবে ফেলে যায়।
গুরুত্বর আহত নজরুল ইসলামের আর্তচিৎকারে আশেপাশের এলাকার লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে সিলেট এম.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
এ হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক থানা পুলিশ এলাকায় ছুটে গিয়ে রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নিহতের ভাই নুরুল ইসলাম ও মিকিরপাড়া গ্রামের মৃত আলাউর রহমানের পুত্র এলাকার চিহ্নিত অপরাধী ভাড়াটিয়া খুনি সেলিম উদ্দিন (৩৫) ও তার ভাই শাহীন আহমদ(৩২) কে আটক করে।
শনিবার হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ও থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম। তারা নজরুল ইসলাম হত্যার সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে নিহতের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেন।
এ ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের পুত্র দেলোয়ার হুসেন বাদী হয়ে শনিবার ১৪জনের নাম উল্লেখ করে কানাইঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানার ওসি মোঃ শামসুদ্দোহা পিপিএম জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হতে পারে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছেন এবং ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে । এ হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ও তিনি জানান।