কোরআন এবং হাদিসের আলোকে মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ হারাম বলে দাবি করেছেন দেশের শীর্ষ আলেম ও মুফতিরা। একইসঙ্গে তারা বলেছেন, এসব মূর্তি-ভাস্কর্য ভাঙার দায়িত্ব সরকারের।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে মূর্তি-ভাস্কর্য স্থাপনে জনমনে বিভ্রান্তি নিরসনে দেশের শীর্ষ আলেম ও মুফতিদের ফতোয়া প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন এ কথা বলা হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি উদ্যোগে ভাস্কর্য নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

ভাস্কর্যের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন কথা হচ্ছে। ফলে জাতীয়ভাবে এ সংক্রান্ত জিজ্ঞাসার সৃষ্টি হয়েছে।

ভাস্কর্য ও মূর্তির বিধান নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভ্রান্তি।  

“দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, মূর্তি ও ভাস্কর্য জায়েজ-নাজায়েজ হালাল-হারাম সংক্রান্ত ইসলামী শরিয়তের বিধান বিষয়ক যে কেউ মন্তব্য ও বক্তব্য দিচ্ছেন।

ইসলামী শরিয়তের বিধান বিষয়ে সম্যক অবগত না হয়ে এ জাতীয় বক্তব্য প্রদান দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় এবং একটি উদ্বেগজনক বিষয়। সেই তাগিদ থেকে শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম ও মুফতি সাহেবদের পক্ষ থেকে ভাস্কর্য ও মূর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সম্মিলিত ফতোয়া প্রস্তুত করা হয়েছে। ”

ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে ফতোয়াটি উপস্থাপন করেন ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রধান মুফতি এনামুল হক কাসেমী।  

লিখিত ফতোয়ায় তিনি বলেন, “মানুষ বা অন্য যে কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কোনো পার্থক্য নেই। পূজার উদ্দেশ্যে না হলেও তা সন্দেহাতীতভাবে নাজায়েজ ও স্পষ্ট হারাম এবং কঠোর আজাবযোগ্য গুনাহ। ইসলামের সুস্পষ্ট বিধানকে পাশ কাটিয়ে প্রাণীর ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে পার্থক্য করে প্রাণীর ভাস্কর্যকে বৈধতা বলে সত্য গোপন করা এবং কোরআন ও সুন্নাহর বিধান অমান্য করার নামান্তর। ” 

তিনি আরও বলেন, “উপরন্তু কোরআন ও সুন্নাহর সুস্পষ্ট বিধানের সামনে বিভিন্ন দেশের ভাস্কর্য ও মূর্তির উপমা টেনে আনা ইসলামের একটি অকাট্য বিধানের অবজ্ঞা করার শামিল। কোন মুসলিম দেশের শাসকদের শরিয়ত বিরোধী কাজ মুসলমানদের জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। তাদের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় হচ্ছে কোরআন, সুন্নাহ এবং ইসলামী শরীয়ত। ”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতি আরশাদ রহমানি, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা এনামুল হক কাসেমী, মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা নুরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।  

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত ফতোয়ায় স্বাক্ষর করেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ৯৫ জন মুফতি ও মাওলানা এবং ওলামায়ে কেরাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *