দেশে করোনার বিস্তার রোধে চলমান লকডাউন বা কঠোর বিধিনিষেধ ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সরকার এই বিধি নিষেধ অব্যাহত রাখায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। একইসাথে বিধি নিষেধ পালনের ক্ষেত্রে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার কাজ পূর্বের মতো চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি লকডাউন পরবর্তী ‘এক্সিট প্লান’ এর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এটি জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে সরকারকে অনুরোধও করা হয়েছে।ভারতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে উদ্বেগ জানিয়ে জাতীয় কারিগরি কমিটি আশঙ্কা ব্যক্ত করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ভারতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার ‘ডাবল ভেরিয়েন্ট’ (নতুন প্রজাতি) চিহ্নিত হয়েছে। এই প্রজাতি দেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি সংকটময় হতে পারে। 

তাই ভারত থেকে আসা সকল যাত্রীকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন থাকা নিশ্চিত করতে হবে। বর্ডার দিয়ে জনগণের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে নজরদারি জোরদার করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের শিথিলতা প্রদর্শন না করতেও অনুরোধ করে কমিটি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারত থেকে আসা যে ১০ জন সংক্রমিত ব্যক্তি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন, তারা যাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদের চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।কমিটির সভায় দেশে অক্সিজেন সংকট নিয়ে সরকারকে সতর্ক করা হয়। ১২০০ বেডের মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতাল চালু করায় সরকারকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি উক্ত হাসপাতালে মেটারনিটি কর্নার/ইউনিটের ব্যবস্থা করার জন্যও বিশেষ পরামর্শ দেয়া হয়। কেবলমাত্র রাজধানী কেন্দ্রিক না করে জেলার হাসপাতালগুলাতে আইসিইউ এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের উদ্যোগ বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। করোনা টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় কিটের দাম কমে যাওয়ায় বেসরকারি পর্যায়ে টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে মূল্য পুনঃ নির্ধারণের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।স্বাস্থ্য কর্মীদের নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, করোনায় কাজ করতে করতে স্বাস্থ্য কর্মীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন। তাদের মনোবল ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এজন্য চিকিৎসকদের নতুন একটি দল তৈরি রাখতে মত দেন কমিটির সদস্যরা। এছাড়া, লকডাউনের সময় চিকিৎসকদের যাতায়াত সহজ রাখা এবং মানসম্মত প্রয়োজনীয় পিপিই তারা পাচ্ছেন কিনা সেটা মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। একইসাথে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী/নার্স/টেকনিশিয়ান/এনেসথেসিস্ট সংকট রয়েছে জানিয়ে এদের নিয়োগের কার্যক্রমকে আবারও গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।জনবলের ঘাটতি রেখে সেবার মান উন্নয়ন সম্ভব নয় জানিয়ে দ্রুত অ্যানেস্থেটিস্ট, চিকিৎসক, মিড ওয়াইফ নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *