“শিক্ষাই শক্তি, জ্ঞানই আলো,শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড “। বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালীন সময় থেকে পৃথিবীর প্রায় সবদেশেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।কারণ করোনা এমন একটি ছোঁয়াচে রোগ যা অন্যান্য ছোঁয়াচে রোগের চেয়ে অতি দ্রুত ছড়ায়। কোমলমতি শিশুরা সামাজিক দুরত্ব সঠিক ভাবে বজায় রাখতে পারবেনা বিধায় করোনার ভিকটিম শিশুরাই বেশি হওয়ার সম্ভাবনা।
উন্নত অনেক দেশে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে অনেক আগে থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশে চৌদ্দ মাস থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো আজ-অব্দি বন্ধ রয়েছে।
আমি মনে করি আমাদের সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ওদের মত আমরা স্কুল গুলো খুলতে পারিনি।যার দরুন শিঘ্রই আমরা মেধাহীন এক প্রজন্ম পেতে যাচ্ছি।
মেধাহীন প্রজন্ম? হ্যাঁ, কথাটি এ কারনেই বলা- দেশে আসার প্রায় একমাস হয়ে গেল,এই একমাসে আমি স্কুল পড়ুয়া অনেক ছেলেদের লাগামহীন, উশৃংখল চলাফেরা লক্ষ করছি।
ভাই-বেরাদারের হাদিয়া দেয়া স্মার্ট ফোনে পাবজি,ফ্রী ফায়ার নামক গেম খেলতে সর্বদা মশগুল। অনেকে ঘুমের ঘোরে একে অপরকে মার,মার বলে চিল্লাফাল্লা করে।বাঁশঝাড়, কলা বাগান,নির্জন স্থানে ওরা ব্যস্ত! খুবই ব্যস্ত।
ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুরের হুমকিতে কেনা মেগাবাইটে অশ্লীল ছবি দেখে পনেরো/ষোল বছরে নুইয়ে পড়া বয়স্কদের চেহারা বানিয়ে ফেলছে ওরা।এসবের একটাই কারন,স্কুল বন্ধ আপাতত যা ইচ্ছা তা করার অধিকার পেয়ে গেছে ওরা।তাদের সামনে কোন টার্গেট নেই। হাটে, ঘাটে, মাঠে অবাধ বিচরণ। শখের বশবর্তী হয়ে অনেক ছেলেপেলে সিগারেটে টান দেয়া শিখে গেছে।আমাদের যত দ্রুত সম্ভব প্রতিষ্ঠান গুলো খুলে দিতে হবে,নয়তো অদূর ভবিষ্যতে জাতি ঘোর অন্ধকারে নিপতিত হবে।
শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি চলতে পারেনা।কোন জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া মানে পুরো জাতি পঙ্গুত্ব বরণ করা।
শিক্ষার এ মাহাত্ম্য নিয়ে নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছেন-‘Education is the most powerful weapon which you can use change the world’ অর্থাৎ শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র যা দিয়ে তুমি পুরো পৃথিবীটার পরিবর্তন ঘটাতে পার।

উন্নত বিশ্বের মত আমাদের দেশে ছাত্র কম,ভবন বেশি এরকম নেই বিধায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়।
আমাদের যা করতে হবে- একটি প্রাইমারি স্কুলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস করে তিন দিনের জন্য হোমওয়ার্কে পাঠিয়ে দিতে হবে। বাকি তিন দিন তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস নিতে হবে।চক্রাকারে তাঁদেরও তিন দিনের জন্য হোম ওয়ার্ক এ পাঠিয়ে আবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস।
এমনটি করার একটাই কারন সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা। তিন দিন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য পুরো স্কুলটাই ব্যবহার করা যাবে। এই তিন দিন তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত থাকার কারণে ওইসব ক্লাস রুমে পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা যেতে পারে। স্কুল ছুটির পর প্রতিটি ক্লাস রুমে জীবাণু নাশক স্প্রে ছিটানো বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে।
একই পন্থা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে চালু রাখতে হবে।
আমার বিশ্বাস এমনটি চালু হলে আগামী প্রজন্ম পূর্ণ মেধায় বিকশিত হয়ে আলোকিত করবে দেশ,জাতি ও পূরো পৃথিবী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *