একের পর এক জমজমাট ম্যাচ উপহার দিয়ে চলেছে চলতি ইউরো কাপ। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত আসরের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ও রোমাঞ্চকর ম্যাচই যেন খেলল স্পেন ও ক্রোয়েশিয়া। গোলের খেলা ফুটবলে একে একে ৮টি গোল হলো এ দুই দলের ম্যাচে। যেখানে শেষ হাসি স্পেনের মুখে।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ৩-৩ গোলে ড্র ছিল নাটকীয় এই ম্যাচ। মূলত স্পেনের করা আত্মঘাতী গোলের কারণে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে। যেখানে আরও দুইবার বল জালে জড়িয়ে ৫-৩ গোলের শ্বাসরুদ্ধকর জয় তুলে নিয়ে লুইস এনরিকের দল, পেয়ে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট।

ইউরো কাপের ইতিহাসে এক ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়ল স্পেন ও ক্রোয়েশিয়া। ১৯৬০ সালের আসরে ফ্রান্স-যুগোস্লোভিয়ার ম্যাচে হয়েছিল ৯টি গোল। সেই ম্যাচে ৫-৪ গোলে জিতেছিল যুগোস্লাভিয়া। আজকের ম্যাচে একদম শেষ মুহূর্তে স্পেনের একটি শট পোস্টে লেগে ফিরে আসায় ৬১ বছর আগের সেই রেকর্ড ছোয়া হয়নি।

ম্যাচে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড না হলেও, ভিন্ন আরেক রেকর্ড নিজেদের নামে করে নিয়েছে স্পেন। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলে জিতেছিল লা রোজারা। ঠিক পরের ম্যাচেই তারা জিতল ৫-৩ গোলে। এর মাধ্যমে ইউরো কাপের ইতিহাসে পরপর দুই ম্যাচে অন্তত ৫ গোল করা প্রথম দল হয়ে গেল স্পেন।

অথচ এ ম্যাচটির শুরুটা ছিল ক্রোয়েশিয়ার উপহার পাওয়া এক গোলে। ম্যাচের ২০ মিনিটের সময় হাস্যকর এক আত্মঘাতী গোল হজম করে স্পেন। মাঝমাঠের কাছ থেকে গোলরক্ষক উনাই সিমনকে ব্যাকপাস দিয়েছিলেন পেদ্রি গনজালেজ। ধীরে আসা বলটি রিসিভ করতে পারেননি সিমন, তার পায়ের ওপর দিয়ে বল গড়িয়ে চলে যায় জালে। লিড পেয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া।

অবশ্য এ লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ক্রোয়াটরা। ম্যাচের ৩৮ মিনিটের সময় সমতাসূচক গোল করেন পাওলো সারাবিয়া। পরে দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ম্যাচের ৫৭ মিনিটের সময় দলকে এগিয়ে দেন ডিফেন্ডার সিজার আজফিলিকুয়েটা। শুধু এগিয়ে গিয়েই থেমে যায়নি স্পেন। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ফেররান তোরেস। মনে হচ্ছিল সহজ জয়ই পেতে চলেছে স্পেন।

কিন্তু দমে যাওয়ার পাত্রও ছিল ক্রোয়েশিয়া। একদম শেষ সময়ে গিয়ে দুই গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরায় তারা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পাঁচ মিনিট আগে ব্যবধান কমান মিরস্লাভ অরসিচ আর অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরান মারিও পাসালিচ। ফলে ৩-৩ অবস্থায় ড্র থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে।

সংক্ষিপ্ত বিরতির পর মাঠে নেমে আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় স্পেন। এগিয়ে যেতে তাদের প্রয়োজন পড়ে মাত্র ১০ মিনিট। ম্যাচের সপ্তম ও দলের চতুর্থ গোলটি করেন স্প্যামিশ ফরোয়ার্ড আলভারো মোরাতা। এর মিনিট তিনেক পর ক্রোয়েশিয়ার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মিকেল ওয়ারজাবাল।

অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটের দ্বিতীয়ার্ধ তথা দ্বিতীয় ১৫ মিনিটেও আরও অন্তত দুইটি গোল করতে পারত স্পেন। কিন্তু গোলের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন মোরাতা আর দূরের পোস্টে লেগে ফিরে আসে দানি অলমোর শট। যে কারণে ৫-৩ গোলের জয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় স্পেনকে।

সূত্রঃ জাগো নিউজ ২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *