সিলেটের গোলাপগঞ্জে রাক্ষুসী কুশিয়ারা নদীর পেটে যাচ্ছে উপজেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ পনাইরচক উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি এখন কোনোমতে ঠায় দাড়িয়ে রয়েছে নদীর কূলঘেঁষে।

ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের একটি অংশ নদীতে তলিয়ে যাওয়ার পর এখন চরম হুমকির মধ্যে রয়েছে এ বিদ্যালয়টি। যে কোনো সময় এ বিদ্যালয়টি নদীতে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী। দীর্ঘদিন থেকে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলেও প্রতিরক্ষা বাধসহ কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা।
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাক্ষুসী কুশিয়ারা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে দিন দিন তীব্র হচ্ছে। নদীতে একের পর তলিয়ে যাচ্ছে খেতের ফসলী জমি, বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ২০০৩ সালে শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের পানিয়াগা গ্রামের একইসঙ্গে ৩৮টি বসতবাড়ি তলিয়ে যায় রাক্ষুসী কুশিয়ারা নদীতে।

জানা যায়, ১৯৩৮ সালে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রান্তিক এ অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রায় শত বছরের পুরনো এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক গুণীজনের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশ ও জাতির সেবা করে যাচ্ছেন। এ বিদ্যাপীঠ রক্ষায় সরকার যদি অচিরেই কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এলাকার শত শত শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবেন।

এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী আমিন উদ্দিন আহমদ আক্ষেপ করে বলেন, সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এ স্কুল একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন। তিনি নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এক দশকেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, নির্বাচন আসলে এ স্কুলকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন জনপ্রতিনিধিরা। অথচ তারাই বেশি উদাসীন স্কুল রক্ষায়। অবহেলিত এ এলাকার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি পড়লে ভয়াবহ নদী ভাঙনরোধে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিবেন।

পনাইরচক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার পাল জানান, ২০১৭ সালে নদী ভাঙ্গন থেকে স্কুল রক্ষার জন্য সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। ফলে দিন দিন বিদ্যালয়টি ভাঙ্গনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। 

সূত্রঃ যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *