কোয়ারেন্টাইন এড়াতে হাজার হাজার প্রবাসী কর্মী টিকা গ্রহণ করতে ঢাকায় গিয়ে ভোগান্তি পড়েছেন। কঠোর লকডাউনে প্রায় হেটে হেটেই টিকা নিতে ঢাকায় যাচ্ছেন তারা।
কখনো হেটে, কখনো রিক্সা বা অটোরিক্সায় করে দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে কমলাপুর রেল স্ট্রেশনে এসে ছিন্নমূল মানুষদের সঙ্গে আশ্রয় নিচ্ছন অনেকে। ঢাকায় তার আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত কেউ নেই যাদের, তারাই এভাবে রাত কাটিয়ে সকালে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা দিতে আসেন তারা।
টিকা নিয়ে ফিরে যাওয়ার পথে কথা হলে বিদেশ গমনেচ্ছু রিয়াদ আহমদ নামে এক কর্মী বলেন, ‘ঢাকা শহরের কিছুই চিনি না। কমলাপুর রাত কাটাইতে পারমু জেনে আসছিলাম। ঢাকায় আসতে পারবো কিনা সেটাও কল্পনার বাইরে ছিল। যাক টিকা নিতে পারছি। কাল থেকে কোন ঘুম নাই। শরীর চলে না। তারপরও বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।’
ফরহাদ হোসেন নামে অপর এক বিদেশ গমনেচ্ছু শ্রমিক বলেন, ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ আমার সবকিছু শেষ। এখন বিমানের টিকেট পেলেই চলে যামু। টিকা না নিলে কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৭৫০০০ হাজার টাকা লাগে। এই টাকা দিয়াও দিছি। আমরা গরিব মানুষ, বিদেশের যাওয়ার প্রায় সব টাকাই ঋণ করে দিছি। কোয়ারেন্টিনের টাকা ফেরতের আশায় লকডাউনের মধ্যে কষ্ট করেই টিকা নিতে আইছি। এই টাকা ফেরত পাইলে অনেক উপকার হবে।’
তবে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর্মীরা নিজেদের ভুলের কারণেই বেশি ভুগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের টিকার বিষয়ে দায়িত্বে থাকা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সারওয়ার আলম বলেন, সৌদি ও কুয়েতগামী কর্মীদের জন্য ঢাকায় সাতটি সেন্টার ডিডিকেটেট করে দেয়া হয়েছিল। কারণ তাদেরকে ফাইজার ও মডার্নার টিকা দিতে হবে। এছাড়া দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন এলাকায় মডার্নার টিকা দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকেও টিকা নিতে পারছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেকেই ঢাকার কেন্দ্রগুলোতে নিবন্ধন করছেন। এতে ঢাকা কেন্দ্রগুলোতে চাপ তৈরি হচ্ছে, অনেকে এসএমএম পেতে দেড়ি হচ্ছে। আবার লকডাউনে অনেকেই কষ্ট করে ঢাকায় এসে টিকা নিতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পরামর্শ দিচ্ছি যাদের ফাইজার বা মডার্নার টিকা প্রয়োজন। তারা যেন কাছাকাছি সিটি করপোরেশন এলাকার কেন্দ্র থেকে মডার্নার টিকা গ্রহণ করেন। দেশের সবগুলো সিটিতেই মডার্নার টিকা প্রদান কার্যক্রম চলমান আছে। কিন্তু অনেকে নিবন্ধনে ভুল করছেন। যেকারণে লকডাউনের মধ্যেও তাদের ঢাকায় আসতে হচ্ছে।