সারাদেশের ন্যায় সিলেটের পূর্বাঞ্চলের উপজেলা গুলো এখন করোনাকালীন সময় পার করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে দেড় বছর থেকে। তত্ত্ব প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।অনলাইনে পাঠদান ও এসাইনমেন্ট তৈরির জন্য শিক্ষার্থীর হাতে হাতে ইন্টারনেটসহ স্মার্ট ফোন।শিক্ষা জন্য ব্যবহীত স্মার্ট ফোন ও ইন্টারনেটের অপব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের কিছু শিক্ষার্থী জড়িয়ে পড়ছে টিকটক লাইকি নামে অশ্লীলঅপকর্মে। কে কার থেকে বেশি ভিউয়ার্স দেখাতে পারে এই প্রতিযোগিতার মোহে ভিডিও করতে দামি ক্যামেরা ও স্মার্ট ফোন হাতে নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা। ভিডেওতে দেখা যায় ছেলেদের মটরসাইলের পিছনে বসে( স্বামী স্ত্রীর মতো ) অন্তরঙ্গ ভাবে চলাচল করছেন। সময় কাটাচ্ছেন সিলেট ভিবাগের নামি দামি রিসোর্ট,হোটেল রেঁস্তোরায়।
সচেতন মহলের প্রশ্ন টিকটকের তরুণ তরুণীদের উচ্চা বিলাশি চলাচলের বিশাল এই টাকার উৎস কোথায়।তরুণীরা কি তাহলে বিলাশ বহুল চলাচলের জন্য নিজে বিলিয়ে দিচ্ছেন। না কি মানব পাচারকারী হৃদয় বাবু ও দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী ফারজানার পথে হাঁটছে আমাদের এলাকার তরুণ ও যুব সমাজ।
টিকটক লাইকির ভার্চুয়াল জগত গুরে দেখা যায়, সংঙ্গবদ্ধ কিশোর গ্যাং বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, বড়লেখা, কুলাউড়ার কিছু তরুণ তরুণীরা শেওলা সেতু ও কাকরভিলা, মাধবকুন্ড, দাসের বাজার, শাহবাজপুর চা বাগান, জাফলং গুরে গুরে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা ভার্চুয়াল জগত টিকটকে ছেড়ে দিচ্ছেন। সংঘবদ্ধ চক্রের ছেলেটি মেয়েটির হাত ধরে প্রেম নিবেদন কিংবা পশ্চিমা সংস্কৃতির নাইট ক্লাবের অনুকরণে নাচানাচি করছে।গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিন এলাকার একটি মেয়ে কিছু দিন পর পর বিয়ানীবাজার এসে বিভিন্ন এলাকার তরুণ তরুনীদের নিয়ে ভিডিও তৈরি করে। টিকটকাররা ঐ তরুণীকে খারাপ মেয়ে বলে আখ্যায়িত করেন।
গত কিছুদিন থেকে ফেসবুক ও অনলাইন পোর্টালে বৈরাগীবাজারের এলাকার মানসিক প্রতিবন্ধী মজনু কে নিয়ে লিখা লিখি হচ্ছে।টিকটকে দেখা যায় মজনু এলাকার কিছু তরুণ ও যুবকদের সাথে অশালীন ভাবে গালাগালি ও নাচানাচি করছে। তাদের কর্মকান্ডে সারা বিশ্বে নিতিবাচক দৃষ্টিতে পরিনত হচ্ছে বৈরাগীবাজার ততা বিয়ানীবাজার উপজেলা।
সাম্প্রতিক সময়ে টিকটকে দেখা যায় নানকার স্মৃতিসৌধে জুতা পায়ে সিগারেটের ধোঁয়া টানতে টানতে উপরের সিঁড়ি থেকে নিচের সিঁড়িতে নামছেন স্থানীয় এক মুক্তিযাদ্ধার সন্তান। পরবর্তীতে বিয়ানীবাজার পৌরসভা কার্যালয়ে সালিশ বৈঠকে ছেলেটি এ রকম কাজ আর করবে না বলে ক্ষমা চায়।
করোনার মহামারিকালীন সময়ে শেওলা সেতুতে এম্বুলেন্সে মুমূর্ষু রোগী তাকা অবস্থায় এম্বুলেন্স থামিয়ে টিকটক ভিডিও তৈরি করেন কয়েকজন যুবক। এই ঘটনা ফেসবুকে বহু সমালচিত হলে ঐ যুবক অনুশোচনা প্রকাশ করে তার আইডিতে একটি ভিডিও আপলোড করেন।
প্রযুক্তির করালগ্রাস থেকে বাদ যাচ্ছে না কোমলমতী শিশুরা।যুবক যুবতিরা শিশুদের দিয়ে অশ্লীল ভিডিও ধারন করে তা আপলোড করছেন নিজেদের আইডিতে। বিয়ের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার জন্য ভাড়ায় নেওয়া ক্যামেরা ম্যান তার ব্যক্তিগত টিকটক আইডিতে বিয়ের কনেসহ আগন্ত মেয়েদের ভিডিও আপলোড করছেন। ঐ ভিডিওর মাধ্যমে মেয়েদের ছবি চলে যাচ্ছে বখাটে তরুণ যুবকদের কাছে। কিছুদিন পূর্বে এরকম একটি ভিডিও নিয়ে দুটি পরিবারের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়।
বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মোহাম্মদ জয়নুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকার তরুণ তরুণীরা প্রযুক্তির অপব্যবহার করে অশ্লীলতায় নিমজ্জিত না হয় তার দিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ দৃষ্টি দিবেন। সচেতন অভিবাবকরা অশ্লীলতার তত্ত্ব দিয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিসকে সহযোগীতা করবেন।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি হিল্লোল রায় বলেন, বিয়ানীবাজার উপজেলার টিকটক লাইকি ব্যবহারকারীদের দিকে আমাদের কঠোর নজিরদারী রয়েছে। কোনো ধরনের অশ্লীল ও অনৈতিক কাজ আমাদের চোখে পড়লে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বিয়ানীবাজারকে শান্তি পূর্ণ রাখতে সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।