আনা এলিজাবেথ জর্জ। ভারতের কেরালা রাজ্যের ২৪ বছর বয়সি তরুণী। ক্যান্সার এবং নিউরোবায়োলজিতে পিএইচডি করছেন তিনি। 

পাঠ্যবিষয়ে নয়, সম্প্রতি আলোচনার জন্ম দিয়েছেন কারুকাজখচিত ভিন্নধর্মী এক শিল্প সৃষ্টিতে। সাড়ে ৫ মিটারের এমন এক সুদর্শন শাড়ি বানিয়েছেন, যা শুধু পরাই নয়-পুরোটাই খাওয়া যাবে। শখের হোম বেকার তিনি। কেকের অর্ডার সরবরাহ করেন মাঝেমাঝেই।
 
অবসর পেলেই বেকিং এবং ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের প্রতি আবেগ দেখাতে ভুল করেন না। আর তা করতে গিয়েই জন্ম দিয়েছেন নতুন বিশ্বরেকর্ড। কারণ, পুরোটা খেয়ে ফেলার মতো শাড়ি বিশ্বে এটাই প্রথম।

শাড়িটি তৈরিতে স্টার্চভিত্তিক ওয়েফার পেপার ব্যবহার করেছেন তিনি। আলু এবং ভাতের মাড় দিয়ে এ পেপার তৈরি হয় বলে একই সঙ্গে এটিকে কাপড়ের আদল দিতে সমস্যা হয় না, অন্য দিকে এটি সুস্বাদু খাদ্যও। 

এ হোম বেকার বলেন, ‘শাড়িটি তৈরিতে এ-ফোর আকারের ১০০টি ওয়েফার পেপারকে আমি কৌশলে জোড়া লাগিয়েছি। কেক সাজানোর মতো করে নকশা হিসেবে কিছু প্যাটার্ন তৈরি করেছি। এমনকি সোনালি জরির পাড় বানানোর উপকরণগুলোরও খাদ্যমান ভালো।’

স্থানীয় ওনাম উৎসবকে সামনে রেখে এ শাড়ি তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন আনা। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর এই উৎসব উপলক্ষ্যে আমি নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।’ 

শাড়িটি তৈরিতে সময় নিয়েছেন দেড় সপ্তাহ। এর ওজন প্রায় দুই কেজি। তবে গবেষণার কাজে একটু বেশি ব্যস্ত থাকায় শাড়িটির সৌন্দর্য বাড়াতে তার সময় লেগেছিল দেড় মাসেরও বেশি সময়। 

আনা জানান, ছোটবেলায় এক শিল্পীকে এমন একটি রুমাল বানাতে দেখেছিলেন, যেটি খাওয়া সম্ভব। সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা পান তিনি। তার এই শাড়ি তৈরিতে খরচ পড়েছে ৩০ হাজার টাকার মতো। 

স্থানীয়ভাবে এর নাম কাসাভু শাড়ি। আনা জানান শাড়িটি তৈরির জন্য বাড়ির দুটি ডাইনিং টেবিলকে লম্বালম্বি রেখে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন। এর ওপর তিনটি প্লাইউড শিট ব্যবহার করেছেন। এর ওপর শাড়ির কাজ করতে তার বেশ সুবিধা হয়েছে।

ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করেন আনা। তিনি তার দৈনন্দিন রুটিনকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। সকালে পড়াশোনা। দিনের দ্বিতীয়ার্ধে বেকিং এবং সৃজনশীলতার কাজ। বেকিংয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন তার নানার কাছ থেকে। এই দক্ষতাকে কাজে লাগাতে জ্যাকব ফ্লোরালস এবং জ্যাকব বেকস নামে দুটি হোমবেকিং ব্যবসাও পরিচালনা করেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *