প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল সিলেট। ফলে এখানে জাতীয় কিংবা স্থানীয় যেকোনো নির্বাচনেই প্রবাসীদের আনাগোনা থাকে। কেউ প্রার্থী হন, কেউবা ভোটের উৎসবে শরিক হতে দেশে ফেরেন। দেশে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া। আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে সিলেট বিভাগের ৪৫টি ইউনিয়নও রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলার ১৫টি ইউনিয়নে হচ্ছে ভোটযুদ্ধ।
এসব ইউনিয়নের মধ্যে কয়েকটিতে চেয়ারম্যান পদে প্রবাসীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ১৫টি ইউনিয়নে ৬৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। তন্মধ্যে সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে দুজন এবং মোগলগাঁও ইউনিয়নে একজন প্রবাসী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে তিনজন, পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নে একজন ও দেওয়ানবাজার ইউনিয়নে একজন প্রবাসী চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
এসব প্রার্থীদের মধ্যে তিনজন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে লড়ছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নে ফ্রান্সপ্রবাসী জয়নাল আবেদীন ও বাহরাইনপ্রবাসী সমছুল হক স্বতন্ত্র থেকে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সমছুল বাহরাইন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি পদেও আছেন। এক্ষেত্রে তিনি আওয়ামী ঘরানার মানুষ।
এদিকে, সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হিরন মিয়া। তিনি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। প্রায় সময়ই তিনি যুক্তরাজ্যে উড়াল দেন।
গেল ইউপি নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চেয়ারম্যান হন। এবারও দলটির মনোনয়ন পেয়ে তিনি আছেন মাঠে।
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। দেশটিতে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন তিনি। উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে আছেন আমিরুল। গেল নির্বাচনের মতো এবারও তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
এ ইউনিয়নে প্রার্থী হয়েছেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মহিবুল রহমান ও ইতালিপ্রবাসী আব্দুর রহমান।
বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নে গেল নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মো. আব্দুল মতিন। কিন্তু এবার দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।
এদিকে, বালাগঞ্জের দেওয়ানবাজার ইউনিয়নে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা ছহুল আব্দুল দলীয় মনোনয়নে এবার চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন।
প্রবাসীদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন), সিলেট শাখার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী সিলেটভিউকে বলেন, ‘সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হওয়ায় এখানে প্রবাসীদেরকেও প্রার্থী হতে দেখা যায়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, প্রবাসী যারা প্রার্থী হন, তারা টাকার লেনদেন করেন। নির্বাচন কমিশন এসব ক্ষেত্রে তেমন সতর্ক দৃষ্টি রাখে না।
তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা যদি জনকল্যাণে কাজ করতে প্রার্থী হন, মানুষের উপকার করতে প্রার্থী হন, তাতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তাঁরা যেন টাকা দিয়ে ভোটের মাঠে কোনো প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা না করেন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।