সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৈরি হচ্ছে কার্গো সার্ভিস। যার মাধ্যমে পণ্য রফতানিতে কমবে দুর্ভোগ, বাড়বে রফতানি। ইতোমধ্যে কার্গো সার্ভিসের একটি স্ক্যানিং যন্ত্র স্থাপন শেষে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে অবকাঠামোগত কাজ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
তবে কার্গো সার্ভিসে স্থাপিত স্ক্যানিং যন্ত্রে কেবল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কৃষিপণ্য রফতানি করা সম্ভব হলেও ওয়্যারহাউজের (গুদাম ও প্যাকেটজাতকরণ) অভাবে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দেশগুলোতে রফতানি সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই কার্গো সার্ভিস চালুর সাথে সাথে ওয়্যারহাউজ নির্মাণের দাবিও তাদের।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার সকালে সিলেট সফরে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সকাল ৯ টায় বিমানযোগে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এসময় বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন কার্গো সার্ভিসের কাজ পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।
পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, কার্গো টার্মিনালের কাজ মোটামুটি শেষের দিকে। মূল মেশিনটা বসে গেছে। এটা শনাক্ত করবে যে কার্গোতে কী মালামাল আছে। এটার সবচেয়ে সুবিধা হলো, একসাথে অনেক কার্গো দিতে পারবেন। কিন্তু কার্গোতে কী আছে, তার প্রত্যেকটা আপনি ডিটেকশন করতে পারবেন। আমাদের দেশে এ ধরনের অনেকগুলো কার্গো কেনা হয়েছে। আরো ৬টি ঢাকার জন্য কেনা হয়েছে। শুধুমাত্র আমাদের সিলেটেরটা ইনস্টল (বসানো) হয়েছে। সুতরাং এটা সিলেটবাসীর জন্য ভালো খবর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে সিলেট থেকে যারা কার্গো পাঠান, তারা প্রথমে ঢাকায় নেন। সেখানে নিয়ে তারপর কার্গো বিদেশে পাঠান। এতে অনেক খরচ বাড়ে। এখান সিলেট থেকে কার্গো বিদেশে গেলে পাঠানোর খরচ কমে আসবে।
এদিকে, কার্গো সার্ভিস চালু হলেও নির্ধারিত ওয়্যারহাউজ না থাকায় সিলেট থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পণ্য রফতানি সম্ভব হলেও যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দেশগুলোতে রফতানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ঢাকাতেই যেতে হবে উল্লেখ করে সিলেট চেম্বারের সভাপতি এ টি এম শোয়েব বলেন, ‘মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত উদ্যোগে সিলেট বিমানবন্দরে কার্গো টার্মিনাল হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক সুবিধা হবে। কিন্তু নির্ধারিত ওয়্যারহাউজ না থাকায় (প্যাকেটজাতকরণ ও গুদাম সুবিধা) যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দেশগুলোতে রফতানির জন্য ঢাকাতেই যেতে হবে। এজন্য আমরা প্রায় দুই বছর আগে কৃষি মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছিলাম সিলেটে একটি ওয়্যারহাউজ করতে। কিন্তু এখনো তার কোনো গতি হয়নি। তবে ব্যাপারটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় অবগণ আছেন। আশা করছি উনি উদ্যোগ নেবেন।
অপরদিকে ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দুই ধাপে চলছে কার্গো টার্মিনালের কাজ। প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয় প্রায় বছরখানেক আগে। আর দ্বিতীয় ধাপের কাজ গত সেপ্টেম্বরের দিকে শুরু হয়ে এখন শেষের পথে। আগামী জানুয়ারি মাসের দিকে এর অবকাঠামোগণ কাজ শেষ হলে পরে এটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চালু করা হবে।