কালের আবর্তে জীবন পঞ্জিকা থেকে বিদায় নিল ২০২১ সাল। সবাই এখন ২০২২ সালকে বরণ করছে। তবে নানা কারণে ২০২১ সাল ছিল কানাইঘাটবাসীর কাছে আলোচিত-সমালোচিত। বছরের শুরুটা পৌর নির্বাচনের আমেজে বেশ ভালো কাটলেও মাঝামাঝি এবং শেষ সময়ে কখনও খুন, কখনও ধর্ষণ, কখনো আবার সড়ক দুর্ঘটনায় সংবাদের শিরোনাম হয়েছে এই উপজেলা।
বিশেষ করে সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত, বিয়ের সেন্টারে জোড়া লাশ, নানার হাতে নাতি, চাচার হাতে প্রতিবন্ধী ভাতিজা হত্যাসহ বেশ কয়েকটি আলোচিত ঘটনা বছরজুড়ে শুধু কানাইঘাটে নয় পুরো দেশজুড়ে ছিল আলোচিত। ২০২১ সালের ঘটে যাওয়া আলোচিত-সমালোচিত কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলো।

নানাকে পাথর ছুড়ে হত্যা করে নাতি
নানাকে পাথর ছুড়ে হত্যার ঘটনাটি উপজেলাজুড়ে ছিলো বেশ আলোচিত। গত বছরের ৬ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের এরালিগুল গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নাতি আব্দুল কাদিরকে (৩২) তখন গ্রেফতার করে কানাইঘাট থানা পুলিশ।
জানা যায়, এরালিগুল খাছাড়িপাড়া গ্রামের মৃত মরতুজ আলীর ছেলে আব্দুল কাদির স্ত্রী নিয়ে তার আপন নানীর দ্বিতীয় স্বামী আব্দুল মালিক উরফে মলিক মিয়ার (৭৩) বাড়িতে থাকতেন। একসময় নানা-নাতির মাঝে মনোমালিন্য দেখা দিলে নানা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নাতি আব্দুল কাদির নানাকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মলিক মিয়ার। এ ঘটনায় মলিক মিয়ার ছেলে আবুল কাসিম বাদী হয়ে আব্দুল কাদিরের বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
বিষপানে শিশুর মৃত্যু
মাত্র ১০ বছরের শিশু নাবিলের বিষপানে মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও কম মাতামাতি হয়নি কানাইঘাটে। গত বছরের ৮ এপ্রিল কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কেরকেরি গ্রামের মৃত হারিছ উদ্দিনের পুত্র নাবিল আহমদ রাত সাড়ে ১২টার দিকে পরিবারের অগোচরে বিষপান করে। পরে তার আর্তচিৎকারে বাড়ির লোকজন উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার পথিমধ্যে মৃত্যু হয় নাবিলের। নাবিল আহমদের স্বজনরা জানান, দীর্ঘদিন থেকে নাবিল মানসিক রোগে ভুগছিল।
ট্রাকচাপায় ২ যুবকের মৃত্যু
গত বছরের ৩ মে জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত-কানাইঘাট সড়কের প্রবেশমুখে একটি ওয়ার্কশপে ট্রাকচাপায় নিহত হন কানাইঘাটের দুই যুবক। তাদের মধ্যে একজন কলেজ শিক্ষার্থী সুলতান আহমদ মিনহাজ (২৬) ও অপরজন আশিক উদ্দিন (২৫)। দুই যুবকের মৃত্যুতে পুরো উপজেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল।
জানা যায়, সুলতান আহমদ মিনহাজ ও তার প্রতিবেশী বন্ধু আশিক উদ্দিন রাতে নিজ বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে দরবস্ত-কানাইঘাট সড়কের প্রবেশমুখে অবস্থিত একটি ওয়ার্কশপে গাড়ির কাজ করাচ্ছিলেন। রাত ১টার দিকে একটি ইট বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওয়ার্কশপে ঢুকে পড়লে ট্রাকের চাকায় পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সুলতান আহমদ মিনহাজ, আশিক উদ্দিন ও ওয়ার্কশপ মালিক গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুহেল আহমদ।
ট্রাক্টরচাপায় ভাই-বোনের মৃত্যু
গত ১১ মে ট্রাক্টর চাপায় আপন ভাই-বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। উপজেলার দিঘীরপার ইউনিয়নের লন্তিরমাটি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তারা ঐ গ্রামের মাহতাব উদ্দিনের ছেলে নাইম আহমদ (৮) ও মেয়ে মাইশা বেগম (৫) । দুর্ঘটনায় আহত হন ট্রাক্টরের চালক শরীফ উদ্দিন। জানা যায়, লন্তিরমাটি গ্রামের শরীফ উদ্দিন ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করছিলেন। তার পাশে বসা ছিল শিশু নাইম ও মাইশা। ট্রাক্টরটি ঘুরানোর একপর্যায়ে উল্টে গিয়ে শিশু নাইম ও মাইশার উপরে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হয়।
ভাতিজার খুনি চাচা!
গত ১৪ জুন কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের একটি টিলার উপর থেকে রুহুল আমিন (২৫) নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধীর ঘাড় কাটা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ রুহুল আমিনের আপন চাচা সোনাতনপুঞ্জি গ্রামের মৃত ইছরাক আলীর পুত্র সামছুল হক ও তার পুত্র ইমরান আহমদকে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করে।
স্থানীয়রা জানান, গত ১৩ জুন রাতে প্রতিবন্ধী যুবক রুহুল আমিন তার চাচা সামছুল হকের বাড়িতে গিয়েছিলেন। পরদিন সোমবার সকাল ৮টার দিকে সামছুল হক এলাকায় চাউর করেন ভাতিজা রুহুল আমিনকে খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। একপর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজন খোঁজাখুঁজি করে শারীরিক প্রতিবন্ধী রুহুল আমিনের ঘাড় কাটা রক্তাক্ত লাশ টিলার একপাশে পড়ে থাকতে দেখেন। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রুহুল আমিনের বড় বোন কুলসুমা বেগম তার আপন চাচা সামছুল হক ও চাচাতো ভাই ইমরান আহমদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দা হাতে তরুণী, দেশজুড়ে ভাইরাল!
গত বছরের ৯ জুলাই শুক্রবার জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বসতবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দা হাতে ভাইরাল হন কানাইঘাটের দুই তরুণী। প্রতিপক্ষের ঘরে হামলা-ভাঙচুর চালানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। ঘটনাটি কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ পূর্র্ব ইউনিয়নের কাড়াবাল্লা গ্রামের।
জানা যায়, কাড়াবাল্লা গ্রামের মইন উদ্দিন লুকু ও সালেহা বেগম সম্পর্কে তারা চাচাতো ভাই-বোন। দীর্ঘদিন থেকে তাদের মধ্যে জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধপূর্ণ জায়গায় একটি টিনের ঘর নির্মাণ করছিলেন মইন উদ্দিন লুকু। প্রতিপক্ষ সালেহা বেগম ও সন্তানেরা মিলে দা, বাঁশ দিয়ে লুকুর টিনের ঘরে হামলা করে ভাঙচুর করেন। এসময় ওই জায়গার বিভিন্ন ধরনের গাছ-পালাও কেটে ফেলেন তারা। এ ঘটনায় মইন উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করে।
তিন মাসে একাধিক আত্মহত্যা
গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে কানাইঘাটে একাধিক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। ১২ বছরের কিশোরসহ সব বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যা বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে তরুণ-তরুণীদের সংখ্যা বেশি ছিল ।

প্রবাসীর মাকে যৌন হেনস্তা করে ভিডিও ইন্টারনেটে
প্রবাসী দুই সন্তানের কাছে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে তাদের মাকে যৌন হেনস্তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি পুরো সিলেটজুড়ে ছিল বেশ আলোচিত।
গত ২৩ আগস্ট মধ্যরাতে উপজেলার আগতালুক গ্রামে নিজগৃহে হেনস্থার শিকার হন ওই নারী। ৬ মিনিট ১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে ওই নারীকে যুবকের হাতে ধরে কাকুতি-মিনতি করতে দেখা যায়। জানা যায় ঘটনাটি গত ২৩ আগস্ট ঘটলেও তার এলাকার পঞ্চায়েত নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে সালিশে সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে ১৩ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা পুলিশের নজরে আসে। রাতে ওই নারীকে থানায় নিয়ে এসে মামলা করানো হয়। পরে পুলিশ এ ঘটনায় অভিযুক্ত কানাইঘাট উপজেলার আগতালুক গ্রামের বরকত উল্লাহর ছেলে আব্দুল্লাহ ও একই গ্রামের রফিক আহমদের ছেলে সায়েদ উল্লাহ ও আব্দুল জব্বারকে গ্রেফতার করে।
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দাদা নাতির মৃত্যু
গত ৪ অক্টোবর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিজ চাউরা পূর্ব গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হয়ে দাদা ও নাতির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- নিজ চাউরা গ্রামের মাওলানা ফখরউদ্দিন (৭০) ও তার নাতি আরিফুল ইসলাম (৮)। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। জানা যায়, মাওলানা ফখর উদ্দিনের বাড়ির পাশে পল্লী বিদ্যুতের একটি লাইন ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। এলাকাবাসী ও মাওলানা ফখরউদ্দিন নিজে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে ফোন করে তার ছিঁড়ার বিষয়টি জানান।এরপরও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। মাওলানা ফখর উদ্দিনের নাতি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম বাড়ি ফেরার পথে বিদ্যুতের ওই ছেঁড়া তারে জড়িয়ে পড়ে। নাতিকে এ অবস্থায় দেখে ফখর উদ্দিন বাঁচাতে গেলে উভয়ই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।
সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ভারত সীমান্তে দুই বাংলাদেশী নিহতের ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দেয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ দুই দিন পড়ে থাকার পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেন।গত ৩ নভেম্বর কানাইঘাটের ডোনা সীমান্তের ভারত সীমান্ত অংশে অবস্থানকালে বিএসএফের গুলিতে মারা যান কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ এরালিগুল গ্রামের আসকর আলী ওরফে আছই (২৫) ও আরিফ মিয়া (২২)। নিহত দুজনের লাশ সীমান্তের ১৩৩১ নম্বর মেইন পিলারের পাশে একটি নালার পাশে পড়ে ছিল। নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করতে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের মধ্যে কয়েক দফা পতাকা বৈঠক হয়। পতাকা বৈঠকে বিএসএফ হত্যার দায় স্বীকার না করায় বিষয়টি অমীমাংসিত ছিল। পরে দু’দিন পর দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে শেষে লাশ দুটি বিজিবির পক্ষ থেকে বুঝে নেওয়া হয়।
প্রেমিককে হত্যা, দুজনের মৃত্যুদন্ড
কানাইঘাটের ইমরান হোসেন (২৫) নামের এক যুবককে হত্যার দায়ে দুজনের মৃত্যুদন্ড দেন আদালত। অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলার দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। গত ২৪ নভেম্বর সিলেট জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ইব্রাহম মিয়া এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কানাইঘাট উপজেলার দুর্গাপুর দক্ষিণ নয়াগ্রামের সৌদিপ্রবাসী বদরুল ইসলামের স্ত্রী সুহাদা বেগম (২৫) ও সুহাদার প্রতিবেশী ও নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীর আলম (২৬)। এছাড়া অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত সুহাদার ভাই ইমরান আহমদ (৩৩) ও দেবর মাসুম আহমদ (৩৫)। জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন কানাইঘাট পৌর শহরে দর্জি ইমরান হোসেন পৌর শহরের সোনাপুর এলাকার বাসিন্দা ইমরানকে কথিত প্রেমিকা সুহাদার শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে নিখোঁজ হন ইমরান। নিখোঁজের দুই দিন পরও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে ইমরানের বাবা আবু বক্কর কানাইঘাট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।পরে ২৩ সেপ্টেম্বর কানাইঘাট থানায় সুহাদা বেগম ও তার ভাই ইমরান আহমদ, দেবর মাসুম আহমদ ও লক্ষীপ্রসাদ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। মামলার পরই পুলিশ সুহাদা বেগম ও জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করে। পরবর্তী সময়ে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে সুহাদার শ্বশুরবাড়ির পুকুর থেকে ইমরান হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর হত্যাকান্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কথিত প্রেমিকা সুহাদা।
বিয়ের সেন্টারে জোড়া লাশ
বছরের শেষে ডিসেম্বর মাসের শুরতেই বিয়ের সেন্টার থেকে জোড়া লাশ উদ্ধারের ঘটনা পুরো সিলেটজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গত ১ ডিসেম্বর সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের গাছবাড়ী বাজারস্থ আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারের একটি কক্ষ থেকে এক মহিলা ও এক পুরুষ বাবুর্চির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বাবুর্চিরা হলেন- কানাইঘাট উপজেলার নয়াগ্রামের মৃত রহমত উল্লাহর ছেলে সুহেল আহমদ (২৮) ও ওসমানীনগর উপজেলার তাহিরপুর গ্রামের মৃত আক্কাছ আলীর মেয়ে সালমা বেগম (৪০)। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় নাজিম উদ্দিন নামের আরেকজনকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে রান্না শেষে রাত ৩টার দিকে তারা কমিউনিটি সেন্টারের ২য় তলার একটি ছোট কক্ষে শুয়ে পড়েন। পরদিন সকাল ৭টার দিকে ঘুম থেকে তারা না উঠলে বিয়ের আয়োজনকারী জসিম উদ্দিন তাদের ডাকতে গিয়ে দেখতে পান- বাবুর্চি সুহেল আহমদ, নাজমা বেগম ও নাজিম এলোমেলো অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এবং কক্ষের ভেতর ধোয়ায় আচ্ছন্ন।
এসময় তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ সুহেল ও সালমা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাজিম উদ্দিনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। একসঙ্গে এই দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় নানা কথা উঠলেও পুলিশের ধারণা ছোট বদ্ধ কক্ষে প্রচুর ধোয়ায় অক্সিজেনের অভাবে দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
সূত্রঃ সিলেট ভিউ