রকেট তৈরির দাবি করে আলোচনায় এসেছেন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক শিক্ষার্থী। রকেটের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। তার দাবি, সরকারি সহায়তা পেলে অধিকতর গবেষণা করবেন।
ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. নাহিয়ান আল রহমান ওরফে ওলি। তিনি ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (ইইই) শিক্ষার্থী। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়।
ওলির দাবি, তার নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল ২০১৯ সালে আলফা সায়েন্স ল্যাবে রকেট তৈরির প্রজেক্ট শুরু করেন। তিন বছর পরিশ্রম ও গবেষণা করে ৬ ফুট ও ১০ ফুট উচ্চতার দুটি প্রোটো টাইপ ৪টি রকেট তৈরি করেন। এর মধ্যে একটির নাম ধূমকেতু-ওয়ান। তবে ৬ ফুট উচ্চতার ধুমকেতু ওয়ান রকেট প্রজেক্টটি এখন চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। রকেটটি ২০ কিলোমিটার ওপরে উঠবে, সঙ্গে সঙ্গে নেমেও আসবে। তবে বাস্তবে তা উড়বে কিনা বিষয়টি এখনও পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
নাহিয়ান আল রহমান ওরফে ওলি বলেন, আমরা ৬ ফুট ও ১০ ফুট উচ্চতার দুটি প্রোটো টাইপ ৪টি রকেট তৈরি করেছি। ধূমকেতু-ওয়ানের ফোর্স প্রায় দেড়শ নিউটন। অপরটির নাম ধূমকেতু-টু। এর ফোর্স চারশ নিউটন। এটির রেঞ্জ প্রায় ৫০ কিলোমিটার এবং ধূমকেতু-ওয়ানের রেঞ্জ প্রায় ২০ কিলোমিটার।
ওলি আরও বলেন, সরকারের সহায়তা ও অনুমোদন পেলেই এই রকেট উৎক্ষেপণ করতে পারব। আর এসব রকেট উৎক্ষেপণের পর আমরা যে তথ্যগুলো পাব তা দিয়ে তাপমাত্রার রিপোর্ট তৈরি করা সম্ভব। এজন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
কলেজ সূত্র জানায়, আলফা সায়েন্স ল্যাবের এই শিক্ষার্থীদের টিমটি একাধিক রোবোটিক্স প্রজেক্টে সফল হয়েছে। তারা ২০১৯ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত টেকফেস্ট নির্বাচনী পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়। পরে তারা ভারতের বিখ্যাত আইআইটিতে অনুষ্ঠিত টেকফেস্টে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে। সেখানেও তারা শীর্ষ-৫ এ জায়গা করে সেমিফাইনালিস্ট হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মো. আ. ওয়াহিদ জানান, দীর্ঘ প্রচেষ্টায় এই রকেট আবিষ্কার করেছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এই রকেট আকাশে উৎক্ষেপণ করতে হলে প্রয়োজন সরকারি বরাদ্দ ও অনুমতি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাই মূখ্য। তবে আমরা আশা করছি দেশের স্বার্থে সরকার এই স্বপ্নবাজ তরুণদের পাশে দাঁড়াবে।
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর কবীর বলেন, রকেট আবিষ্কারের বিষয়টি দেশের জন্য আশার খবর। তবে এটি সফল উৎক্ষেপণের জন্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। খুব দ্রুত এ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে। আশা করছি এর মধ্য দিয়ে দেশে আবিষ্কারের নতুন অধ্যায় সূচিত হবে।
সূত্রঃ জাগো নিউজ