বিয়ানীবাজারের তিলপাড়া ইউনিয়নের পিরের চক এলাকার দুলাল আহমদ নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এলাকার কদম আনি বিলে যুবকের লাশ ভেসে উঠলে এলাকার শতশত মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নিহত দুলাল আহমদ (৪০) পীরের চক এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের বড় পুত্র। তিনি প্রথম স্ত্রীর করা একটি মামলায় পলাতক আসামী ছিলেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ক্ষোব্ধ এলাকাবাসীকে নিয়ন্ত্রণ করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুলাল আহমদ শনিবার বিকালে স্থানীয় কুশিটিকি সেতুর উত্তর হাওরে নৌকা বাইচ দেখতে গিয়েছিলেন। নৌকা বাইচ শুরু হওয়ার পূর্বে সাদা পোশাকের একদল পুলিশ দুলালের পাশে দাড়ানো যুবককে নাম জিজ্ঞেস করতেই দুলাল আহমদ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তিনি হাওরের পানিতে ঝাপ দিয়ে সাঁতার কাটতে থাকলে পুলিশ সদস্যরা প্রথমে দৌড়ে এবং পরে একটি নৌকায় করে পিছু নেয়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
রোববার সকালে গ্রামের লোকজন কদম আনি বিলে মাছ শিকারে গেলে দুলাল আহমদের ভেসে উঠা লাশ দেখতে পান। প্রত্যেক্ষদর্শীরা দুলাল আহমদের বাড়িতে খবর দেন। এ ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে শত শত এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পুলিশ যে নৌকায় পিছু নিয়েছিলো সে নৌকার লগিসহ হাতে থাকা বাঁশ দিয়ে তাকে আঘাত করায় তিনি পানিতে ডুবে মারা যান।
এদিকে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভাসমান লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়না তদন্তের লাশ সিলেট ওসমানি হাসপাতালের মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহত দুলাল আহমদের মরদেহ বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিনের মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিলপাড়া ইউনিয়ন বিট পুলিশ কর্মকর্তা হলেও হাওরের লাশ উদ্ধারে তিনি যাননি।
বিয়ানীবাজার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, পুলিশ ওয়ারেন্টুভুক্ত আসামী ধরতে অভিযানে গেলে আসামী পালিয়ে যেতে পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিলো। আজ এলাকাবাসীর কাছে থেকে খবর পেয়ে হাওর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, নিহত দুলাল আহমদকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ নিয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে উত্তেজিত ছিলেন। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে বিক্ষোব্ধ মানুষকে আশ্বস্থ’ করেছি। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে সিলেটের পুলিশ সুপার পরিদর্শনে আসবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। লাশের ময়না তদন্ত শেষে জানা যাবে তিনি কিভাবে মারা গেছেন।