বৃষ্টি উপেক্ষা করে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে দুই বছর বিরতির পর অনুষ্ঠিত এবারের ১৯৫তম জামাতে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন।
বৃহৎ এই ঈদ জামাতে ইমামতি করেছেন তরুণ ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা শোয়াইব আহমেদ।
ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ এ জামাতের ইমামতি করার কথা থাকলেও তিনি অসুস্থ থাকায় জামাতে অংশ নিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম।
জানা গেছে, দুই-তিন দিন আগে থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এ মাঠের জামাতে অংশ নিতে এসে জড়ো হতে থাকে। মঙ্গলবার সকাল আটটার আগেই বিশাল ঈদগাহ ময়দান মুসল্লিদের উপস্থিতিতে ভরে ওঠে।
সকাল ১০টায় নামাজ শুরু হলে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের আশপাশের রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, নরসুন্দা নদীর পাড়সহ বিভিন্ন স্থানে নামাজ আদায় করতে মুসল্লিরা কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে যান।
রেওয়াজ অনুযায়ী নামাজ শুরুর ১৫ মিনিট আগে পরপর তিনবার শটগানের গুলি ছুড়ে মুসল্লিদের নামাজে দাঁড়ানোর সংকেত দেওয়া হয়।
শোলাকিয়ায় নামাজ আদায় করতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মুসল্লিরা ট্রেন, বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল যোগে আসতে থাকেন। এসব ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আত্মীয়-স্বজন, আবাসিক হোটেল, শহরের বিভিন্ন মসজিদ এবং ঈদগাহ মাঠ এলাকার খোলা ময়দানেও আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে রাত যাপন করে থাকেন। এ ছাড়াও পায়ে হেঁটে এসেও অংশ নিয়ে থাকেন হাজার হাজার মুসল্লি।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজসহ শহরের বিশিষ্টজনরাও নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে বাংলাদেশ তথা মুসলিম উম্মার শান্তি সমৃদ্ধি কামনা এবং করোনাসহ সকল রোগব্যাধি-মহামারি থেকে রক্ষায় মোনাজাত করা হয়। এ মোনাজাতে অংশ নিয়ে অনেক মুসল্লি আবেগ আপ্লুত হয়ে চোখের জলে বুক ভাসান।