সম্প্রতি দুই দফা আঘাত হানা ভয়াবহ বন্যায় সিলেটের বিয়ানীবাজারে শেওলা স্থলবন্দর সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা পরবর্তী সময়ে বন্দর থেকে শেওলা সেতু পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। ফলে যান চলাচলের পুরোপুরি অনুপযোগী হয়ে পড়েছিলো রাস্তাটি। 

বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইট ও বালি ফেলে গর্তগুলো ভরাট করলেও ভোগান্তি কমেনি এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চালকরা শেওলা স্থলবন্দর যেতে চান না। তাই বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি খুব কম করছেন। সড়কের বেহাল দশার কারণে কমে এসেছে রাজস্ব আদায়।

বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারকরা বলছেন, একমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য এ বন্দর দিয়ে দিন দিন আমদানি-রপ্তানি কমছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন চরম বিপাকে।

সিলেটের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ী নুরুল আম্বিয়া বলেন, পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে এ বন্দরের ব্যবসায়ীরা সরকারকে বছরে শত কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ও ভ্যাট দিয়ে আসছেন। কিন্তু সড়কের অবস্থাও খারাপ। তাই বাধ্য হয়ে শেওলা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি প্রায় বন্ধ করে দিয়েছি। কোনো মালবাহি গাড়ি এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে চায় না।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি চন্দন সাহা বলেন, এ সড়ক নিয়ে বলার কিছু নেই। সওজকে সড়কটি টেকসইভাবে সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার কথা বললে তারা নানা টালবাহানা করে। সড়কের দূরবস্থার কারণে বন্যা পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকদিন যান চলচাল বন্ধ ছিলো। তবে দু-তিন আগে গর্তগুলোতে শুধু ইট আর বালি ফেলে ভরে দিলেও এটা স্থায়ী সমাধান নয়। বৃষ্টি দিলে ফের গর্ত তৈরি হবে। এ সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য আমরা ব্যবসা করতে পারছি না।

এ বিষয়ে শেওলা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম সিলেটভিউ-কে বলেন, বন্দরটি সচল রাখতে এ সড়ক টেকসইভাবে মেরামত করতে হবে। আপাতত সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইট ও বালি ফেলে গর্তগুলো ভরাট করে দিলেও বৃষ্টি হলেই ফের বেহাল হয়ে পড়বে রাস্তাটি। তাই রাজস্ব আয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সড়কটি মেরামত করে দিতে হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে সিলেটভিউ-কে বলেন, কোনো রাস্তা ভাঙলে সহসাই বরাদ্দ মেলে না। আমরা এ সড়ক মেরামতের জন্য ইস্টিমিট পাঠিয়েছি। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে। আপাতত যান চলাচলের সুবিধার্থে ইট ও বালি দিয়ে গর্তগুলো ভরে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *