মৌলভীবাজারের রাজনগরের ফল ব্যবসায়ী জয়নাল মিয়াকে (৫৫) কে কুলাউড়ায় ডেকে এনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কুলাউড়ার জয়চন্ডী ইউনিয়নের পূর্ব রঙ্গীরকুল এলাকার নোয়াবাগিচা রাবার বাগানের পাশে এ ঘটনাটি ঘটে। 

জয়নাল মিয়া রাজনগরের টেংরা বাজারের ফল ব্যবসায়ী ও রাজনগর ইউনিয়নের দত্তগ্রামের বাসিন্দা মুন্সি আরজদ মিয়ার ছেলে। এদিকে স্থানীয় এক ব্যক্তির ফেসবুক লাইভে জয়নাল আহতবস্থায় মুসা ইব্রাহীম নামে একজনের নাম বলেন। সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। মুসা ইব্রাহীম জয়চন্ডী ইউনিয়নের পাঁচপীর জ্বালাই এলাকার মৃত শামসুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের ছেলে মাছুম মিয়ার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সোমবার বিকেল ৩টার দিকে জয়নাল মিয়া তার বড় ছেলে মাছুমকে তার ফলের দোকানে বসিয়ে রেখে কুলাউড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পরে সন্ধ্যার দিকে কুলাউড়া জয়চন্ডীর পূর্ব রঙ্গীরকুল এলাকার নোয়াবাগিচা রাবার বাগানের বাংলো ঘরে থাকা লোকজন হঠাৎ করে জয়নালের চিৎকার শুনতে পান। জয়নাল রক্তাক্ত অবস্থায় বাংলো ঘরে ঢুকেন। এসময় ঘরে থাকা বাগান কর্মকর্তা হামিদুল হাসানসহ কয়েকজন ব্যক্তিকে জয়নাল জানান, তার সাথে থাকা মুসাসহ দুজন লোক কুপিয়ে জখম করেছে। পরে স্থানীয়রা জয়নালকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

বাগান কর্মকর্তা হামিদুল হাসান জানান, সন্ধ্যার দিকে আমরা কয়েকজন বাগানের বাংলো ঘরে ছিলাম। হঠাৎ একজন লোকের চিৎকার শুনে দরজা খুলে রক্তাক্ত অবস্থায় জয়নালকে দেখি। ঘরে গিয়ে জয়নাল জানান, জয়চন্ডীর মুসা ইব্রাহীমসহ আরেক ব্যক্তি তার (জয়নালের) সাথে ছিলেন। তখন আমাদের সাথে থাকা বাউল সরওয়ার তার ফেসবুক আইডিতে একটি লাইভ ভিডিও শেয়ার করেন। সেখানে মুসা ইব্রাহীমের কথা জানান জয়নাল। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় জয়নালের।

নিহতের ছেলে মাছুম মিয়া বলেন, আমার বাবা বিকেলে রাজনগরের টেংরা বাজারে আমাকে দোকানে বসিয়ে রেখে কুলাউড়ায় যান। রাত ৮টার দিকে ফিরে যাওয়ার কথা ছিলো। মুসা ইব্রাহীম আমাদের গ্রামে মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেজন্য আমার বাবার সাথে ভালো সম্পর্ক হয় মুসার। মুসার সাথে আমার বাবার ব্যবসায়িক লেনদেন ছিলো।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুছ ছালেক রাত পৌনে ৯টার দিকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ জড়িতদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করছি, ব্যবসায়ীক আর্থিক লেনদেনের কারণে ফল ব্যবসায়ী জয়নালকে হত্যা করা হতে পারে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *