বিয়ানীবাজারে আব্দুল আউয়াল নামের এক ফেরিওয়ালার হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে সিলেটের বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় ঘোষণা করেন। ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আহমদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দন্ডপ্রাপ্ত জজ মিয়া (২৫) হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানার আগোয়া মাইজের হাটি গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার কসবা তিমুখী আমির মিয়ার কলোনীর বাসিন্দা।

মামলার সংক্ষিপ্তি বিবরণে জানা গেছে, কাপড়ের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ২০০৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ানীবাজার থানার পৌরসভা এলাকার কসবা গ্রামের সামাদ মিয়ার কলোনীর বাসিন্দা টাংগাইল জেলার ভূয়াপুর থানার দুবায়ালেংডার গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে আব্দুল আউয়ালকে (৩০) কাপড় বাকীতে না দেওয়ায় জজ মিয়া ধারালো চাকু দিয়ে তার (আব্দুল আউয়াল) বুকে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ঘাতক জজ মিয়াকে আটক করেন।

খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহত আব্দুল আউয়াল এর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন এবং জজ মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত আব্দুল আউয়ালের চাচাত ভাই মজনু মিয়া বাদি হয়ে একমাত্র জজ মিয়াকে আসামী করে বিয়ানীবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং- ২৫ (২৪-০২-২০০৬)।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে বিয়ানীবাজার থানার এসআই জহিরুল ইসলাম খান (পিপিএম) একই বছরের ২৪ মে একমাত্র আসামী জজ মিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র নং-৮৫) দাখিল করেন এবং একই বছরের ১৭ অক্টোবর আদালত এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আদালত আসামী জজ মিয়াকে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড এর ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রমে কারাদন্ড প্রদান করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুল ইসলাম ও স্টেট ডিফেন্সে অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *