শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। কোরআন-হাদিসে জুমার দিনের অনেক গুরুত্ব, ফজিলত ও আমল বর্ণিত হয়েছে। উত্তম পোশাক পরিধান করে নামাজ আদায়ের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এখানে জুমার নামাজের পোশাক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো—

জুমার নামাজের জন্য বিশেষ পোশাক

শরিয়তে নারী-পুরুষের নির্ধারিত সতর ঢাকার বিধান দেওয়া হয়েছে।

নামাজের সময় পরিপাটি হয়ে আরো উত্তম পোশাক পরিধান করে নামাজ আদায় করতে হয়। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান! প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা (সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ) গ্রহণ করো।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১)

সুরা মুদ্দাসসিরের ৪ নম্বর আয়াতে নামাজের সময় পবিত্র পোশাক পরিধান করার কথা বলা হয়েছে। সুন্দর পোশাক পরিধান করা আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতের বহিঃপ্রকাশ।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, মানুষ চায় যে তার পোশাক সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক, এও কি অহংকার? নবী করিম (সা.) বলেন, আল্লাহ সুন্দর, তিনি সুন্দর ভালোবাসেন। অহমিকা হচ্ছে দম্ভভরে সত্য ও ন্যায় অস্বীকার করা এবং মানুষকে ঘৃণা করা। (মুসলিম,  হাদিস : ১৬৭; আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৯২)

জুমার দিনের পোশাক

রাসুল (সা.) জুমার দিন উত্তম পোশাক পরিধানের গুরুত্ব দিতেন।অথচ বেশির ভাগ মানুষ এ ক্ষেত্রে উদাসীন। ঈদের নামাজের মতো জুমার প্রস্তুতি নিতে হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) জুমার দিন লোকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি তাদের বেদুইনদের পোশাক পরিহিত দেখেন। তখন রাসুল (সা.) বলেন, তোমাদের কী হলো? যার সামর্থ্য আছে সে যেন তার কাজকর্মের সময় ব্যবহৃত কাপড় দুখানা ছাড়া জুমার নামাজের জন্য আরো দুখানা কাপড়ের ব্যবস্থা করে।(আবু দাউদ, হাদিস : ১০৭৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৯৬)

কাপড় ব্যবহারের ক্ষেত্রে রাসুল (সা.)-এর প্রিয় রং ছিল সাদা। তিনি এই রঙের কাপড় ব্যবহারের কথা বলেছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করবে। কারণ তা তোমাদের জন্য উত্তম। আর তোমরা সাদা কাপড় দিয়ে মৃতদের দাফন করবে এবং তোমাদের জন্য উত্তম সুরমা হলো ইসমাদ। এতে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পলকের পশম উৎপন্ন করে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৩৮; তিরমিজি, হাদিস : ৯৯৪)

যথানিয়মে জুমা আদায়ের পুরস্কার

আল্লাহ তাআলা জুমার দিনকে আখেরি নবীর উম্মতদের উপহার দিয়েছেন। নেকি অর্জন করার বড় মাধ্যম বানিয়ে দিয়েছেন। যথাসাধ্য উত্তম পোশাক পরিধান এবং অন্য সুন্নত পালনে আছে ক্ষমার ঘোষণা। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, তার কাছে থাকা সুন্দরতম জামাটি পরিধান করল এবং সংগ্রহে থাকলে সুগন্ধি ব্যবহার করল, এরপর জুমায় উপস্থিত হলো, কারো কাঁধ ডিঙিয়ে গেল না, তারপর আল্লাহর তাওফিক অনুযায়ী সুন্নত নফল পড়ল, অতঃপর খতিব (খুতবার জন্য) বের হওয়া থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত নিশ্চুপ থাকল, তার এই নামাজ এ জুমা থেকে সামনের জুমা পর্যন্ত (গুনাহর) কাফফারা হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩; সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ২৭৭৮)

✍🏻 শরিফ আহমাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *