রমজানের আর মাত্র দুই মাস বাকি। তার আগে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। পণ্যের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই বাজারে, বরং ঊর্ধ্বমুখী। এতে ক্রেতাদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। বেড়েই চলছে একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে বিক্রেতারা যে স্বস্তিতে আছেন সেটিও কিন্তু না। বেচা-কেনা কমে যাওয়ায় তারাও অস্বস্তিতে পড়েছেন। ক্রেতা সাধারণকে বোঝানো কষ্টকর হয়ে পড়ছে তাদের জন্য।
চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যেরই দাম বেড়েছে। অস্থির বাজারে নতুন করে বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু, ছোলার দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে এই পণ্যগুলোর দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা কেজিতে। আর আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। বেড়েছে রসুনের দামও। এর চালের দাম কমার কোন লক্ষ্মণ নেই।
এদিকে, রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় তেলের দাম বাড়ছেই। গত কয়েক মাসে কয়েক দফায় তেলের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলার দাম কেজিতে বেড়েছে ১০টাকা। সিলেটের বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা কেজিতে। রমজানের আগে তেলের দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মুরগির বাজারেও শান্তি নেই। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম এখন সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা। বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা।
শীতের এই মৌসুমে বাজারে শীতকালীন সবজি থাকলেও দাম আকাশ ছোঁয়া। ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না।
ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে দিশেহারা তারা। সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। আর দুই মাস পর রমজান। এখন থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে পরবর্তীতে আর সম্ভব হবে না। বাজার মনিটরিং এ সরকারকে আরো কার্যকর ভূমিকা নেয়ার দাবি জানান তারা।
বেসরকারি চাকুরীজীবী সিয়াম জানান, পেঁয়াজ রসুন আদার দাম অনেক বেড়ে গেছে। সবকিছুর দাম এত বেশি যে ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আমাদের যে ইনকাম, তা দিয়ে মাসের ১০ দিনের বাজারও হয় না।
রিকশাচালক রহমান জানান, আমরা গরিব মানুষ। কোনো কিছুতেই হাত দেওয়া যাচ্ছে না। আজকে যে জিনিসের দাম ১০ টাকা, কাল তার দাম ৩০ টাকা। এমন করে দাম বাড়লে মানুষ বাঁচবে কী করে?
আর বিক্রেতারা জানান, আগের তুলনায় এখন পেঁয়াজ, রসুন, আদা সবকিছুরই দাম বেশি। কারণ আমরা এসবের সরবরাহ ঠিকমতো পাচ্ছি না। যা পাচ্ছি তা অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। মানুষকেও বোঝাতে পারছি না। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এলসি ছাড়লে দাম আবার কমে যাবে।