সিলেট টেস্টের প্রথম দিনের শেষ বিকালে ৩ উইকেটে ৩২, দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে আরও তিন উইকেট হারিয়ে ১৩২! সেখান থেকে বেশি দূর যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল সামান্য। পারেওনি বাংলাদেশ। ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে বোলাররা মান বাঁচানোর লড়াই করেছেন শুধু।

নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম যেন দেখালেন টেস্টে কীভাবে টিকে থাকতে হয়। আর শেষে এসে খালেদ আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম দলের মান বাঁচিয়েছেন ব্যাট হাতে নিয়ে। লঙ্কানদের বিপক্ষে সিলেটে একসময় শঙ্কা ছিল দেড়শ পেরুনো নিয়ে। সেখানে স্কোর গিয়ে দাঁড়িয়েছে দুইশ এর কাছাকাছি।

টপঅর্ডার এবং মিডলঅর্ডারের সবটাই যখন ব্যর্থতায় মোড়া, তখন লিডের আশা করাও যেন বোকামি। বাংলাদেশ লিড পায়নি। তবে কাছাকাছিও যাওয়া হয়নি তাদের। টাইগারদের ইনিংস শেষ হয়েছে ১৮৮ রানে। প্রথম ইনিংস শেষে লঙ্কানদের লিড ৯২ রানের।

দিনের শুরু থেকেই নাকি বাকি দিন নিয়ে আভাস পাওয়া যায়। সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের শুরুটাই হয়েছে ভীষণ নড়বড়ে। মাহমুদুল হাসান জয় ৯ রান এবং তাইজুল ০ রান নিয়ে দিন শুরু করেন। দুজন মিলে ২১ রান যোগ করতেই পতন ঘটে দিনের প্রথম উইকেটের। জয় নিজের রানের সঙ্গে আর ৩ রান যোগ করেই আউট হয়েছেন।

গতকাল সেকেন্ড স্লিপে দাঁড়িয়ে কামিন্দু মেন্ডিসের ক্যাচ ছেড়েছিলেন। আজ নিজেই ক্যাচ দিয়েছেন সেকেন্ড স্লিপে। ১২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হলো তাকে। শাহাদাত হোসেন দীপু এসেছিলেন এরপর। তাইজুলের সঙ্গে জুটি জমেছিল কিছুটা। ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দুজনেই চেয়েছেন রয়েসয়ে খেলতে।

দুজনের এই জুটি যখনই আশা দেখাচ্ছিল, তখনই আক্রমণে আসেন লাহিরু কুমারা। আর তাতেই সাফল্য পায় লঙ্কানরা। বাড়তি বাউন্সের বলটা বুঝে ওঠার আগেই দীপুর ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা নেন দিনের দ্বিতীয় ক্যাচ। ৮৩ রানে বাংলাদেশ হারায় ৫ম উইকেট। ব্যক্তিগত ১৮ রানে সাজঘরে ফেরেন দীপু।

তাইজুলকে সঙ্গ দিতে এরপর ক্রিজে এসেছেন অভিজ্ঞ লিটন কুমার দাস। দুজনে মিলে পার করেছেন বাংলাদেশের দলীয় শতরান। লিটন খেলছেন একেবারেই টেস্ট মেজাজে। আর টেলএন্ডার হয়েও উইকেট আগলে রেখেছেন তাইজুল ইসলাম। কিন্তু টাইগারদের এই জুটিও বেশিক্ষণ টেকেনি। লাহিরু কুমারার দুর্দান্ত ইনসুইং ভেঙে দেয় লিটনের প্রতিরোধ। দলীয় ১২৪ এবং ব্যক্তিগত ২৫ রানে ফেরেন লিটন।

শেষ আশা ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু যেখানে সবাই ব্যর্থ, মিরাজ ব্যতিক্রম হবেন কেন! পুরো ইনিংসের নিয়ম মেনে এই অলরাউন্ডারও ফিরেছেন হতাশ হয়ে। ৩৪ বলে ১১ রান করে কাসুন রাজিথার বলে আউট তিনি। দলের দরকারের সময়ে অহেতুক বড় শট খেলতে গিয়ে খুইয়েছেন নিজের উইকেট। তার একটু আগেই অবশ্য তাইজুল ফিরে গিয়েছিলেন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলে। ৪৭ রানের ইনিংসটা বাংলাদেশের মান বাঁচিয়েছে। সেইসঙ্গে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি না পাওয়ার আক্ষেপও মিশে ছিল তার ইনিংসে।

মান বাঁচানোর কাজ করেছেন খালেদ এবং শরিফুল। শরিফুল স্বভাব অনুযায়ী বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন। দুই ছক্কায় করেছেন ১৫ রান। দলের স্কোর তাতে আরও খানিক বেড়েছে। আর সিলেটের লোকাল বয় খালেদ করেছেন ২২ রান। তাতেই টাইগারদের ইনিংস গেল ১৮৮ পর্যন্ত। লঙ্কানদের হয়ে চার উইকেট পেয়েছেন বিশ্ব ফার্নান্দো। ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন কাসুন রাজিথা এবং লাহিরু কুমারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *