বিয়ানীবাজার উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন খাল মরে গেছে। এতে ফসল উৎপাদন খরচ বেড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। সেচের পানি না পাওয়ায় শুধু বোরো আবাদেই একজন কৃষকের প্রতি বিঘায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।

বিয়ানীবাজার পৌরসভা বাবুর খালের উৎসমুখ দখল করে বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করেছে। ফলে প্রতি বর্ষায় মাথিউড়া ও তিলপাড়া ইউনিয়নে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
 

সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে প্রাকৃতিক খাল ছাড়াও খনন করা হয় ছোট-বড় অসংখ্য সেচ খাল, নিষ্কাশন খাল, জলকপাট (স্লুইসগেট), কালভার্টসহ বিভিন্ন অবকাঠামো। সুনাই, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর সাথে সংযুক্ত উপজেলার প্রায় অর্ধশত খাল এখন মৃত প্রায়।


এতে ফসল উৎপাদন খরচ যেমন বেড়ে যাচ্ছে, তেমনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। নিয়মিত ও যথাযথভাবে খনন না করায় বহু সেচ খালে ঠিকমতো পানিই পৌঁছে না বলে জানান স্থানীয়রা। আবার বেশ কিছু সেচ খাল অব্যবহৃত থাকায় ভরাট হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এগুলোর এখন আর কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় না।

সরজমিন দেখা যায়, সুরমা নদী থেকে সৃষ্ট কাকুরা খাল, করতি খাল, বাঘবাড়ী খাল, গদার খালের অস্থিত্বই নেই। মুল্লাপুরের উপর দিয়ে প্রবাহিত জমাদার খার, লোলা নদী, করল নদীর কথা ভুলে গেছে স্থানীয়রা। তিলপাড়া ইউনিয়নের ঝরাপাতা খাল, মাটিজুরা নদী, গুন্ডাখালী খাল কালের গর্ভে স্থান করে নিয়েছে। আলীনগরের কাপাশ খাল অনেকেই চেনেনা। কুড়ারবাজারের কুড়া খাল, ভেউলর খাল, গোবিন্দশ্রী খালের নাম জানো নতুন প্রজন্ম। পৌর এলাকার লুলা খাল কেবল নামে আছে অস্থিত্ব নেই।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ছোট সেচ খালগুলো ভরাট হয়ে অকার্যকর হয়ে পড়ে। কোনো কোনোটি আবার মাটির সঙ্গে মিশে গিয়ে অস্তিত্বই হারিয়ে ফেলেছে। কোথাও কোথাও এসব সেচ খাল দখল করে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটও তৈরি হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এসব খালে বাঁশের ঘের তৈরি করে মাছ শিকার করায় খালের পানি স্বাভাবিক প্রবাহে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে।

একইসাথে পার্শ্ববর্তী ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনসহ নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের। নদী আইন অনুযায়ী এসব প্রান্তিক জেলেদের জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা। কিন্তু নদীগুলোতে অবৈধভাবে ৬/৭টি মাছের ঘের তৈরি করেছে প্রভাবশালীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *