বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের নির্বাচন বুধবার। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে। তবে এই অপেক্ষামান সময়ে সবচেয়ে বেশী আলোচনায় আছে ভোটের দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট থাকবে কি-না, তা নিয়ে। রবিবার বিকাল থেকে এই আলোচনার সূত্রপাত। কারণ ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বিয়ানীবাজারেও ব্যাপক ঝড়বৃষ্টি অব্যাহত। সোমবার রাত থেকে টানা বিদ্যুৎবিহীন এই উপজেলা। একইসাথে নেই মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেটও। এতে নির্বাচনী এই উপজেলায় অনেকটা ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, এখানকার মোট ৮৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্টিত হবে। ভোট গ্রহণের দিন এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নির্বাচনী পরিবেশে বিঘœ ঘটবে। বিদ্যুৎ না থাকলে অনেক কেন্দ্রই থাকবে অন্ধকার। তাছাড়া ভোটারের গোপন কক্ষ আলোকিত না থাকলে বয়ষ্ক ভোটারদের বেশ বেগ পেতে হবে। বৃষ্টি ভেজা কিংবা বৈরী আবহাওয়া থাকলে ভোটার উপস্থিতি কমে যাবে। ইতোমধ্যে পৌরশহরসহ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় টমটম চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশনের বিধি নিষেধের কারণে যান চলাচলও সীমিত। বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক বাসাবাড়িতে পানি নেই, পানির জন্য চলছে হাহাকার।
বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: জামাল হোসেন বলেন, বৈরী আবহাওয়া আমাকে শংকিত করে তুলছে। বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট স্বাভাবিক করতে প্রশাসনকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: জহির উদ্দিন বলেন, আবহাওয়া যেমন থাকুক বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট স্বাভাবিক না রাখলে ভোটের পরিবেশ বিঘিœত হবে। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আশরাফুল হক রুনু জানান, ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে আমরা অনেক এগিয়েছি। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় ভোটের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আসলে প্রকৃতির উপর কোন হাত নেই।
স্থানীয় ইন্টারনেট ব্যবসায়ী হাসান শাহরিয়ার জানান, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ইন্টারনেট সরবরাহে বিঘœ ঘটবেনা। বিয়ানীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ভজন কুমার বর্ধণ জানান, প্রতিকুল আবহাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু নানা কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছেনা।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ফোনের সংযোগ পাওয়া যায়নি।
নির্বাচনী পরিস্থিতি জানতে অনেক প্রবাসী ফোন করে দেশে থাকা স্বজনদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। হঠাৎ সংযোগ পেয়ে তারা ভোটের আগের দিন এমন বৈরী পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনেক ভোট কেন্দ্রে খবর নিয়ে জানা যায়, বিদ্যুৎ না থাকায় ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা কে›েন্দ্র অস্বস্থিকর সময় কাটাচ্ছেন। অপরিচিত এলাকায় অনেক প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বৈরী পরিবেশে কিছুটা হলেও স্বন্ত্রস্থ। মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় তারা নিজ বাসাবাড়িতে যোগাযোগ করতে পারছেননা।