সিলেট নগরের হযরত মানিকপীর (রহ.) কবরস্থান থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আবুল হাসান সাবিল (২২) নামে এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি করিয়ার সার্ভিস পাঠাও’র কর্মী ছিলেন।
মরদেহের পাশ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরিও উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকেই সাবিলের হত্যাকারীকে ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ। বিকেলে স্থানীয় বাসিন্দা আর গণমাধ্যমকর্মীদের সহায়তায় আটক করা হয় শাহিন আহম্মদ (১৯) নামে আরেক তরুণকে। যিনি স্থানীয়দের কাছে সাবিল হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানা যায়।
নিহত সাবিল সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আব্দুল হান্নান শিমুলের ছেলে। তিনি মহানগরের সাপ্লাই এলাকায় বসবাস করতেন। আর শাহিনের বাসা কাজীটুলা এলাকায়।
সাবিল সাপ্লাই এলাকার আব্দুল হাসান শিমুলের একমাত্র ছেলে।
সাবিলের বাবা আব্দুল হাসান শিমুল বলেন, একা সংসার চালানো সম্ভব না হওয়ায় ছেলেকে চাকরিতে পাঠান। তার ছেলে সাদাসিধে ও সহজ সরল ছিলো।কিছু দিন আগে নতুন ফোন কিনে দিয়েছিলেন ছেলেকে। তবে সেই ফোনটিও তার কাছ থেকে কারা নিয়ে গেছে।
সাবিলের মা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে সাবিলকে ঘর থেকে ডেনে নিয়ে যান তার পূর্বপরিচিত শাহিন আহম্মেদ। তখন সাবিলের মা শাহিন ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। জবাবে কাজ আছে বলে জানায় শাহিন।
মায়ের কাছ থেক এই তথ্য পাওয়ার পর বিকেলে সাবিলের স্বজন ও প্রতিবেশিরা শাহিনকে বাসা থেকে ডেনে নিয়ে আসেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন রিপোর্টার নয়ন নিমু। সাবিলকে বাসা থেকে ডেকে নেওয়ার পর কী ঘটেছিলো তা শাহিনের কাছে জানতে চান নিমু। প্রথমে শাহিন কিছু স্বীকার করতে না চাইলেও একপর্যায়ে পুলিশের ভয় দেখালে সাবিলকে হত্যার কথা স্বীকার করে শাহিন।
স্থানয়িরা জানান, শাহিন বলেছেন, টাকার জন্য তিনি সাবিলকে খুন করেন।
শাহিনের বরাত দিয়ে স্থানীয়রা জানান, সকালে বাসা থেকে ডেকে নেওয়ার পর সাবিলের কাছে পাঠাওয়ে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার আবদার করে শাহিন। এসময় সাবিল তাকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয়। এরপর সাবিলকে মানিকপীর কবরস্থানের টিলায় নিয়ে যায় শাহিন। এসময় সাবিলের কাছে থাকা পাঠাওয়ের পণ্য ও নগদ অর্থ নিতে চান শাহিন। এতে সাবিল বাধা দিলে তাকে ছুরিকাঘাত করে শাহিন। একপর্যায়ে শাহিন সব টাকা দিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিলেও মন গলেনি শাহিনের। ছুরিকাঘাতে সাবিলের মৃত্যু নিশ্চিত করে সে পালিয়ে যায়।
এরপর স্থানীয়রা শাহিনকে পুলিশেরকোছে হস্তান্তর করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, পাঠাও কুরিয়ারে কাজ করা আবুল হাসান সাবিলের সাথে মাঝে মধ্যে ডেলিভারিতে সাহায্য করতো শাহিন। বৃহস্পতিবার সাবিলের কাছে টাকা চাইলে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সাবিলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সেখান থেকে পালিয়ে যায় শাহিন।
2024-06-07
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.