যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ের জন্য লড়ছেন পাঁচ বাংলাদেশি আমেরিকান। তারা হলেন- জর্জিয়া স্টেটের পঞ্চম সিনেট-ডিস্ট্রিক্ট থেকে শেখ রহমান, সপ্তম সিনেট ডিস্ট্রিক্ট থেকে নাবিলা ইসলাম, নিউ হ্যামশায়ার স্টেটের রকিংহাম-২০ থেকে আবুল বি খান, কানেকটিকাট সিনেট ডিস্ট্রিক্ট-৪ থেকে মো. মাসুদুর রহমান এবং ভার্জিনিয়া সিনেট ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ থেকে সাদ্দাম সেলিম।

রিপাবলিকান পার্টি থেকে আবুল বি খান এবং অন্য চারজনই ডেমোক্র্যাট। এবার ষষ্ঠ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের জন্য লড়ছেন পিরোজপুরের সন্তান আবুল খান। চতুর্থ মেয়াদের সিনেটর হওয়ার জন্য লড়ছেন জর্জিয়ার সিনেট ডিস্ট্রিক্ট-৫ থেকে কিশোরগঞ্জের সন্তান শেখ রহমান।  


একই স্টেটের সিনেট ডিস্ট্রিক্ট-৭ থেকে পুনরায় বিজয়ী হতে লড়ছেন নোয়াখালীর সন্তান নাবিলা ইসলাম। কানেকটিকাট সিনেট ডিস্ট্রিক্ট-৪ থেকে পুনরায় সিনেটর হতে মাঠে রয়েছেন চাঁদপুরের সন্তান মো. মাসুদুর রহমান। ভার্জিনিয়া সিনেট ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ থেকে পুনরায় একই আসনে বিজয়ের জন্য লড়ছেন নোয়াখালীর সন্তান সাদ্দাম সেলিম।

উল্লেখ্য, এই পাঁচজনই মার্কিন মুল্লুকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি এবং পাঁচজনই এবারও বিজয় পাবেন বলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটাররা মনে করছেন। এই পাঁচজনের সঙ্গেই এ প্রতিনিধির আলাদাভাবে কথা হয়েছে। তারা প্রবাসীদের দোয়া চেয়েছেন ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য। তারা সিটিজেনশিপ গ্রহণকারী প্রত্যেক প্রবাসীকে কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। আসন্ন নির্বাচন ঘিরে প্রবাসীরাও বেশ সরব। প্রেসিডেন্ট পদে প্রধান দুই প্রার্থী অর্থাৎ কমলা হ্যারিস আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে সভা-সমাবেশ করছেন।

ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত বাংলাদেশি আমেরিকানের ৯০ শতাংশ ডেমোক্র্যাট হলেও এবার ভোট প্রদানে ভিন্নতা আসবে বলে উল্লেখ করেছেন অধিকাংশই। গাজা পরিস্থিতি, অভিবাসন এবং অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় কমলার প্রতি বিরক্ত অনেক প্রবাসী। তবে সেসব প্রবাসীর অধিকাংশই ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও ভোট দিতে চাননি। গত দুই সপ্তাহে তেমন পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন ঘটেছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতির পক্ষ-বিপক্ষ অর্থাৎ বিএনপি-আওয়ামী লীগ হিসেবে উল্লেখিত হয়েছেন সেসব ভোটার। এই শ্রেণির প্রবাসীর মধ্যে যারা বিএনপির সমর্থক তারা জো বাইডেনকে বিজয়ী দেখতে চাচ্ছেন।

অপরদিকে, আওয়ামী লীগ সমর্থকরা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নিবন্ধিত হলেও ট্রাম্পকে জয়ী দেখতে চান। তাদের ধারণা, ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট হলে ড. মুহম্মদ ইউনুসের ক্ষমতা কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। যদিও ব্যক্তি বিশেষের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় কখনোই মার্কিন নীতিতে পরিবর্তন আসে না, এটা ঘটে থাকে সামগ্রিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের অনুমোদনে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান পার্টির সমর্থক ভোটারের সঙ্গে।

তার অন্যতম হলেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, অ্যাটর্নি সোবহা তাসনিম, মো, জয়নাল আবেদীন, আকতার আলম, সমিরুল ইসলাম বাবলু। সবাই কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, যাকে খুশি তাকে ভোট দিন, কোনো সমস্যা নেই। কারণ, ভোট দিলেই কমিউনিটির অবস্থান সুসংহত হয় প্রশাসন ও রাজনীতিতে।  একই আহ্বানে ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স প্যালেসে বার্ষিক সিভিক অ্যাঙ্গেজমেন্ট ডিনার পার্টি হয়েছে।

বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাডভোকেসি গ্রুপ’ তথা বাগের প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে এ ডিনার পার্টিতে মূল বক্তব্য রাখেন কংগ্রেসম্যান জামাল বউম্যান। মুসলিম আমেরিকান এই কংগ্রেসম্যান বলেন, গাজা পরিস্থিতি নিয়ে কমলা হ্যারিসের ওপর আমাদের ক্ষোভ থাকলেও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ট্রাম্পকে ধরাশায়ী করার বিকল্প নেই। এ ছাড়া কমলা হ্যারিস ইতোমধ্যেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের অঙ্গীকার করেছেন।

অভিবাসন ইস্যুতেও কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে দৃঢ়মত পোষণ করেছেন কমলা হ্যারিস। এভাবেই গোটা কমিউনিটি আক্রান্ত হয়েছে নির্বাচনি জ্বরে। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জোরালো ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন বলে প্রতিয়মান হচ্ছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.