প্রশাসনের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার আবারো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে। এরমাধ্যমে গত কয়েকদিনের অচলাবস্থার অবসান হতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে আলোচনা শেষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, ৮ দফা দাবির মধ্যে ৭টি ছিল একাডেমিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। আর বাকি একটি ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও জনসংযোগ কর্মকর্তার পদত্যাগ। তবে মূল অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক সাময়িক বরখাস্ত করায় রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবি বিবেচনা করা হয়েছে।
তারা বলেন, যেহেতু এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। সেহেতু তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত প্রক্টরিয়াল দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এছাড়া বাকি ৭টি দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে ভাইস চ্যান্সেলর আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে আগামী বৃহস্পতিবার সকল ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আলিমুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে।
গত বৃহস্পতিবার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদলের টানানো দুইটি ব্যানার ছিড়ে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় কিছু বহিরাগত এতে যোগ দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রক্টোরসহ মোট ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলও আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেক তদন্ত কমিটি গঠন করে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের ব্যানার ছেঁড়াকে রাষ্ট্রবিরোধী কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিষয়টি রাষ্ট্রবিরোধী, ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড। এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৮ দফা দাবিতে রোববার থেকে আন্দোলনে নামে।
৮ দফা দাবি আদায়ে রোববার প্রশাসনিক ভবনের তালা দেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার সমস্যা সমাধানে ৩০ সদস্যের শিক্ষার্থী দলে সাথে আলোচনা করা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার আবারও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেলে উপাচার্যের সাথে এলাচটনা শেষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.