মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় নবদম্পতি ব্যবসায়ী সালাম আহমদ (২৩) ও তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার (১৯) ছয় দিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে স্বজনেরা বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার মিয়ারবাজার এলাকায় তাদের সন্ধান পান। 

এ দম্পতি নিখোঁজের বিষয়ে সম্প্রতি তাদের স্বজনদের পক্ষ থেকে কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। 

এ দম্পতির বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মনসুর এলাকায়। কুলাউড়া পৌর শহরের দক্ষিণ বাজার এলাকায় সালামের পান বিক্রির পাইকারি দোকান রয়েছে। প্রায় সাড়ে চার মাস আগে ফারজানার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।

সালামের বড় ভাই আলী আহমদ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সালাম ব্যবসার জন্য স্থানীয় কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে চড়া সুদে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা ধার নেন। বিষয়টি সালাম পরিবারের অন্য সদস্যদের জানাননি। সম্প্রতি পাওনাদারেরা টাকার জন্য তাকে চাপ দিতে থাকেন। এতে বাধ্য হয়ে সালাম স্ত্রীকে নিয়ে কুষ্টিয়ায় পরিচিত এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে আত্মগোপনে চলে যান। সালাম কৌশলে নিজের দোকানের কর্মচারীর কাছ থেকে বিকাশে ৩০ হাজার টাকা নেন। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে প্রথমে একটি আবাসিক হোটেলে ভাড়া থাকেন তারা। পরে সেখানে একটি বাসা ভাড়া নেন।

আলী আহমদ আরও বলেন, পুলিশের প্রযুক্তির সহায়তায় সালামের অবস্থান চট্টগ্রাম বলে জানা যায়। এরপর কুলাউড়ার পরিচিত কয়েকজনের সহযোগিতায় বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অবস্থান সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হন তারা। বৃহস্পতিবার সকালে বাঁশখালীর মিয়ারবাজার এলাকার একটি বাসায় সালাম ও তার স্ত্রীর সন্ধান মেলে। এ সময় দুজনই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। একপর্যায়ে সালাম আত্মগোপনের ঘটনাটি তাদের জানান। সালাম ও তার স্ত্রীকে উদ্ধারের বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। তারা মাইক্রোবাসে করে চট্টগ্রাম থেকে কুলাউড়ায় ফিরছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, ব্যবসায়ী সালাম ও তার স্ত্রী ফারজানার নিখোঁজের ঘটনায় আলী আহমদ ২৭ অক্টোবর জিডি করেন। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ২৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পরিচিত এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে সালাম স্ত্রী ফারজানাকে নিয়ে রওনা দেন। এর পরদিন (২৬ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সালাম অন্য একটি মুঠোফোন থেকে নিজের দোকানের এক কর্মচারীকে ফোন করে বিকাশে ৩০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। পরে কর্মচারী ওই ফোন নম্বরে টাকা পাঠান। এর পর থেকে সালামের ব্যক্তিগত ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিকাশে টাকা পাঠানোর নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এতে সন্দেহ হওয়ায় ভেড়ামারার ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, সালাম ও তার স্ত্রী সেখানে যাননি।

জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, ব্যবসায়ী সালাম ও তার স্ত্রীর সন্ধান মিলেছে বলে স্বজনেরা তাদের জানিয়েছেন। তারা কুলাউড়ায় ফিরলে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.