চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বেশ বড়সড় এক ধাক্কাই খেল অস্ট্রেলিয়া। চোটে জর্জরিত স্কোয়াডের শক্তি অনেকটা কমে গিয়েছে আগেই। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ না পাওয়া শ্রীলঙ্কার কাছে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হারলো অজিরা। দুই ম্যাচের কোনোটিতেই সেভাবে লড়াই করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া, করেছে অসহায় আত্মসমর্পণ।
অনবদ্য এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন কুশল মেন্ডিস।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অজিদের ১৭৪ রানে হারিয়ে হারিয়েছে লঙ্কানরা। কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিংয়ে নেমে পাথুম নিসাঙ্কা এবং নিশান মাদুশকাকে নিয়ে লঙ্কানদের উদ্বোধনী জুটিটা বেশিক্ষণ টেকেনি। ২০ বলে ৬ রানের ইনিংস খেলে দলের ১৫ রানের মাথাতে সাজঘরে ফিরে যান নিসাঙ্কা।
নিসাঙ্কার বিদায়ের পর মাদুশকার সাথে যোগ দেন কুশল মেন্ডিস। দুজনের কার্যকরী ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। সময়ের সাথে সাথে ক্রিজে জমে যান মাদুশকা এবং কুশল। ফিফটি ছুঁয়েছেন দুজনই। ফিফটির পরেই অবশ্য থেমেছেন মাদুশকা। ৭০ বলে ৫১ রান করে দলে ১১৩ রানের মাথায় আউট হন লঙ্কান ওপেনার।
কুশল টিকে ছিলেন। ফিফটি ছুঁয়ে এগোতে থাকেন সেঞ্চুরির দিকে। পরিস্থিতি বুঝে রানের গতি বাড়িয়েছেন কুশল। তাতে লঙ্কানদের বোর্ডেও রান উঠতে থাকে। আরেক প্রান্তে কামিন্দু মেন্ডিস থিতু হতে পারেননি, ৮ বলে করেছেন ৪ রান। তবে অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা থিতু হতে পেরেছেন। আসালাঙ্কা এবং কুশলের জুটিতে চড়ে এগোতে থাকে লঙ্কানরা।শেষমেশ তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারটা ছুঁয়ে ফেলেন কুশল। অনবদ্য এক সেঞ্চুরিতে ১১৫ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলে দলের ২১৫ রানের মাথায় আউট হন কুশল মেন্ডিস। শেষ দিকে আসালাঙ্কার সাথে যোগ দেন জানিথ লিয়ানাগে। ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে এগিয়েছেন দুজন। আসালাঙ্কা ছুঁয়েছেন ফিফটি।
আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়েছেন আসালাঙ্কা।
নির্ধারিত ৫০ ওভারের খেলা শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৮১ রানের পুঁজি দাঁড় করায় শ্রীলঙ্কা। ৬৬ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন আসালাঙ্কা। ২১ বলে ৩২ রানের ক্যামিও খেলে টিকে ছিলেন লিয়ানাগে।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১টি করে উইকেট নেন বেন ডোয়ারশুইস, অ্যারন হারডি, শন অ্যাবট এবং অ্যাডাম জাম্পা। জবাব দিতে নেমে দুই অজি ওপেনার ম্যাথু শর্ট এবং ট্রাভিস হেডের জুটিটা বেশিক্ষণ টেকেনি। দলের ১৬ রানের মাথায় ৮ বলে ২ রান করে বিদায় নেন শর্ট। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক। ৯ বলে ৯ রান করে আউট হন তিনি। টিকে থাকা ট্রাভিস হেড আউট হয়েছেন ১৮ বলে ১৮ রান করে, দলের রান তখন মোটে ৩৩।
দ্রুতই শীর্ষ তিন ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করার অভিযানে নামেন জশ ইংলিশ এবং অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। দুজনের জুটি থেকে আসে ৪৬ রান। ইংলিশ খেলেন ২৭ বলে ২২ রানের ইনিংস।
টপাটপ উইকেট হারিয়েছে অজিরা।
দলের ৭৯ রানের মাথাতে ইংলিশের বিদায়ের পর যেন মড়ক লাগে অজি ইনিংসে। একের পর এক উইকেটের পতনে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়তে থাকে অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ আউট হয়েছেন ৩৪ বলে ২৯ রান করে, দলের ৮৩ রানের মাথায়। শেষ ৬ ব্যাটারের একজনও ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের কোটা। টপাটপ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০৭ রানের মাথায় অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ১৭৪ রানের বিশাল জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। মাত্র ২৮ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছে অজিরা। লঙ্কানদের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন দুনিথ ভেল্লালাগে। ৩টি করে উইকেট শিকার করেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এবং আসিথা ফার্নান্দো।
এই জয়ের ফলে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করলো শ্রীলঙ্কা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.