রোগে আক্রান্ত হলে এলাকার জনসাধারনের চিকিৎসা সেবার গন্তব্য হাসপাতাল। যেখানে মানুষ নিজেকে ফিরে পায়। চিকিৎসার মতো এমন স্পর্শকাতর সেবার নীড় হাসপাতালের নানামুখী সংকটে ধুকছে বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই মেডিকেল সাব-সেন্টার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জামের কারণে এখানে স্বাস্থ্য সেবায় দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
জানা যায়, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে নেই হাসপাতালে কোনো মেডিকেল অফিসার। ফ্যামেলী ওয়েলফেয়ার ভিজিটরের ও সংকট। একজন ডিএমএফ হয়ে আছেন হাসপাতালটির সর্বেসর্বা।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, চারখাই ইউনিয়নের বাসিন্দা রয়েছেন ২০ হাজারের বেশি। স্বাস্থ্যখাতে মুনাফা ভিত্তিক বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ ছাড়া সরকারি সাব-সেন্টারটিতে নেই কোনো ভালো সেবার মান। তাছাড়া নিম্নবিত্ত, বিত্তহীন পরিবারের আধিক্য রয়েছে তাদের চিকিৎসা সেবার অধিকারে বড় বাঁধা হয়েছে।
হাসপাতালের অবকাঠামো বিপর্যয়ে মূল ভবনে দেখা দিয়েছে ফাটল, বিভিন্ন জায়গায় খসে পড়েছে পলেস্তারা। বেশ কয়েকটি জানালার কাঁচ ভেঙে গিয়ে বর্ষায় বৃষ্টির পানি ঢুকে নষ্ট হচ্ছে আসবাবপত্র গ্রিলে ধরেছে জং। ঔষধ ডিসপেনসারি কক্ষের মেঝের ফাটল দিয়ে অনায়াসে বাহিরের পানি ভিতরে ঢুকে যার সাথে প্রাণঘাতী প্রাণী ঢুকে যাওয়ার প্রবণতাও বহুলাংশে। এছাড়াও নিরাপত্তা, দূষিত পরিবেশে হচ্ছে ব্যাহত স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা। ভবনের নিচ তলায় তিনটি টয়লেটের মধ্যে একটি ব্যবহারের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। চারখাই হাসপাতালটি পূর্ব-সিলেটের ছয় উপজেলার সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এরপরও প্রতিদিন এই হাসপাতালের বর্তমান সেবা গ্রহীতা রোগীর সংখ্যা ৮০ থেকে ১১০ জনে। বিভিন্ন উপজেলায় যাত্রাপথে দূর্ঘটনার শিকার আহতদের সংখ্যাও প্রায় ১০ থেকে ১৫ জনে পৌছাঁয়।
হাসপাতালে আসা রোগীদের অভিযোগ, ডাক্তার কক্ষে নেই পর্দা। রোগীকে পরীক্ষার জন্য যে এক্সাম বেডে নেওয়া হয় তার সাইজ অনেক সরু। পর্দার বাহিরে থেকে ভিতরে কার্যক্রম আঁচ করা যায়, এতে অনেক রোগীর বিব্রতকর সমস্যা তৈরি হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির জনবল ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংকট মূল সমস্যা। জনবল সংকটে সৃষ্টি হয়েছে আরো অনেক সংকট। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাব। যার ফলে অপরিচ্ছন্ন ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশেই রোগী সেবা নিতে হয়। বর্হি:বিভাগে জনবল সংকট তীব্র। নিরাপত্তাকর্মীর শূন্যতায় সন্ধ্যা হলেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে ভিড় জমায় মাদকসেবীরা। শূণ্য আয়ার পদ, নেই ফার্মাসিস্ট। এমএলএসএসও নেই।
এসব নিয়ে জানতে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে একাধিকবার যোগযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.