প্রাকৃতি কন্যা জাফলং ইসিএ এলাকায় অবৈধভাবে বালু -পাথর উত্তোলন বন্ধে চালানো অভিযান নিয়ে জনমনে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযানে রওয়ানা দেওয়ায় আগেই খবর পেয়ে পাথর ও বালু খেকোরা ড্রেজার মেশিন ও বোমা মেশিন নিয়ে ইসিএ এলাকা থেকে উধাও হয়ে যায়। আর তার পরিণাম ভোগ করতে হয় সাধারণ বারকি শ্রমিকদের।
রবিবার (২৭ জুলাই) জাফলংয়ে সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বালু মিশ্রিত পাথরবোঝাই ৫০ নৌকা ধ্বংস ও ৫টি ট্রাক ভর্তি বালু জব্দ করেন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিমন সরকার জাফলংয়ের বল্লাঘাট থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। অভিযানে খনিজ বালু মিশ্রিত পাথর বোঝাই প্রায় ৫০টি নৌকা নষ্ট করা হয়েছে এবং ৫টি ট্রাকে লোডিং করা বালু জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত বালু জাফলং পুলিশ চৌকিতে সংশ্লিষ্ট থানার এসআই এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদারের জিম্মায় রাখা হয়।
খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোকে নির্দেশ দেয়া হয় যে, জব্দকৃত এই মালামালগুলো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করতে হবে। এর আগে ২৪ জুলাই খনিজ সম্পদ বিভাগের সংযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈকত রায়হানের নেতৃত্বে ও খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর সহযোগিতায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউয়েরগড় এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে।
এই অভিযানে অবৈধভাবে উত্তোলন করা ৫২, ৫০.২ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ লাখ ৬২ হাজার ৫১০ টাকা। জব্দকৃত পাথরগুলো স্থানীয় ইউনিয়ন সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়।
সংশ্লিষ্টরা অবৈধ খনিজ সম্পদ আহরণ ও পরিবহণের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকার আশ্বাস দিলেও সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টায় সরজমিনে জাফলং সেতু থেকে জাফলং জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত কয়েক হাজার বারকি নৌকা, সেইভ মেশিন, বোমা মেশিন ও ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করতে দেখা যায়। এছাড়া কয়েক হাজার ট্রাক দিয়ে বালু ও পাথর পরিবহন করতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য বহিস্কৃত বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহপরান, আওয়ামী লীগ নেতা কালা সামসু, মোজাম্মেল হক মেনন, খোকন, নুরুজ্জামান, বিএনপি নেতা জমিদার সেলিম, ট্রাক শ্রমিক নেতা ছবেদ আলী এসব সেইভ মেশিন থেকে প্রতিদিন ২৫ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে।সিলেট জেলা ভ্রমণ গাইড
এ বিষয়ে বহিস্কৃত বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম শাহপরান বলেন, আমি বালু ও পাথর উত্তোলনের সাথে সম্পৃক্ত নেই। তবে আমার নিজস্ব জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করছি।
গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ সরকার তোফায়েল এ প্রসঙ্গে বলেন, জাফলং ইসিএ এলাকা থেকে পাথর ও বালু খেকোদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একাধিক মামলাও হয়েছে। তবু তাদের থামানো সম্ভব হচ্ছেনা।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রতন কুমার অধিকারী বলেন, গতকাল জাফলং ইসিএ এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে সরে আসার পর বালু ও পাথর খেকোরা তাদের অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। আমরা আবার অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.