মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের হরিণছড়া চা বাগানে সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে বিষাক্ত গ্যাসের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চার যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
মোবাইল ফোন তুলতে গিয়ে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে।
বুধবার (৯ জুলাই) রাত ১১টার দিকে চা বাগানের ওই এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হরিণছড়া চা বাগানের একটি সেপটিক ট্যাংকে মোবাইল ফোন পড়ে গেলে এক যুবক তা তুলতে নিচে নামেন। নামার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন এবং আর উঠতে পারেননি।
পরবর্তীতে তার বড় ভাই ভেবে নেন, হয়তো নিচে পড়ে গেছেন, তাই তাকেও উদ্ধার করতে নিচে নামেন। কিন্তু তিনিও একইভাবে গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর একে একে আরও দুইজন তাদের উদ্ধারে নামেন, কিন্তু কেউই বুঝতে পারেননি ভিতরে লুকিয়ে আছে মৃত্যুর ফাঁদ। চারজনই ধাপে ধাপে প্রাণ হারান।
মৃত চারজন হলেন হরিণছড়া চা–বাগানের শ্রমিক কৃষ্ণরবি দাস (২০), শ্রাবণ নায়েক (১৮), নিপেন (২৭) ও রানা নায়েক (১৬)।
এছাড়া অসুস্থ রবি বুনার্জিও (২০) একই বাগানের শ্রমিক। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সব্যসাচী পাল তমাল জানান, হাসপাতালে চারজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।
শ্রীমঙ্গল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা ধারনা করছি সেপটিক ট্যাংকের বিষক্রিয়ায় এই চারজনের মৃত্যু হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় পুরো চা বাগান এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। একই পরিবারের দুই ভাইসহ চার তরুণের এমন অকাল মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে নেমে আসে হৃদয়বিদারক দৃশ্য। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.