সিলেটের জকিগঞ্জে পুলিশের পৃথক অভিযানে আন্তঃজেলা ডাকাতচক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দুটি প্রাইভেটকার, ১১ দিন আগে সংগঠিত ডাকাতির লুণ্ঠিত বিপুল পরিমাণ মালামাল, নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুলাই গভীর রাতে জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের খিলোগ্রাম এলাকায় এক বসতবাড়িতে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল হানা দেয়। এ ঘটনায় জকিগঞ্জ থানায় মামলা হলে, ডাকাতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে মাঠে নামে পুলিশের একাধিক টিম।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ ও ৪ আগস্ট সিলেটের গোলাপগঞ্জ, ওসমানীনগর, সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকা (এসএমপি), এবং সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর ও বিশ্বম্ভরপুর থানাধীন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাতচক্রের চার সক্রিয় সদস্যকে আটক করে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন— সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার ভুরুঙ্গাপুর পূর্ব তিলাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশীদের ছেলে ছোয়াবির আহমেদ প্রকাশিত ছাব্বির (৩৯), গোলাপগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর নোয়াপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সুমন মিয়া (৩৬), সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার উত্তর কালনিরচর গ্রামের মৃত আরজদ্দ উল্লার ছেলে সোহেল মিয়া (৪২), সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাঘবের গ্রামের সুমন মিয়ার ছেলে রুহুল আমিন (২৫)।
ডাকাতদেরকে গ্রেফতারের পর তাদের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-খ-১১-৬৫৮২), পূর্বে উদ্ধার করা আরেকটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ-১১-৪৯৫৪), নগদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, নেপালি মুদ্রা ৭ হাজার ৮৯০ রুপি, ৩৪টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, ৭টি আইফোন, ২৬টি বাটন ফোন, ৫টি বিদেশি হাতঘড়ি, ৫টি ট্যাব, ২টি ল্যাপটপ, ১টি ভিডিও ক্যামেরা, ৫টি শাড়ি, ৪টি ছাতা, ১টি বড় ল্যাগেজ, ৩টি হ্যান্ডব্যাগ, কিবোর্ড, চার্জার, খেলনা পিস্তল, লোহার সুচালো সাবল, হাতুরি, সুইস চাকু, স্ক্রুড্রাইভার, প্লাস ও গোল্ড প্লেটের বিভিন্ন অলংকার উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের বিরুদ্ধে সিলেট রেঞ্জের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র ও চুরি মামলার রেকর্ড রয়েছে। এ চক্রের আরও দুই সদস্যকে আগেই গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ গ্রেফতার চারজনকেও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না জানান, “ডাকাতির ঘটনার পরপরই আমরা একাধিক টিমে বিভক্ত হয়ে ডাকাতদের গ্রেফতারে অভিযান চালাই। দীর্ঘ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তির সহায়তায় আন্তঃজেলা এই চক্রের চারজনকে আটক করে তাদের হেফাজত থেকে বিপুল পরিমাণ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের আরও সদস্যদের নাম পাওয়া গেছে, তাদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.