মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত সাড়ে আটটার দিকে আখাউড়া সীমান্ত হয়ে তিনি ভারত পালিয়ে গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পাঁচ বছর আগে রায়হান আহমদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন। আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এই মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। যেকোনো দিন রায় ঘোষণার কথা ছিল।
কিন্তু এরই মধ্যে গত ৪ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে গত রোববার (৯ আগস্ট) সিলেটের কারাগার থেকে মুক্তি পান। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত সাড়ে আটটার দিকে এসআই আকবর আখাউড়া সীমান্ত হয়ে ভারত পালিয়ে গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে হাইকোর্ট থেকে এই আসামি জামিন পাওয়ার ঘটনা ছিল টক অব দ্যা সিলেট। জামিন প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
জামিনের খবরে হতাশা ব্যক্ত করে নিহত রায়হানের মা বলেছিলেন, এখন সে দেশ থেকে পালিয়ে যাবে।
তার এই সন্দেহের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মাথায় ঘটনা সত্য হলো।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর হত্যাকাণ্ডের পরপরই ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় কানাইঘাট সীমান্ত থেকে আটক হন এসআই আকবর। তারপর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
এ মামলার অপর আসামি আশিক এলাহীও দু’য়েকদিনের মধ্যে জামিন পেতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। মামলার অন্য আসামিরা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
তাদের মধ্যে একজন যুক্তরাষ্ট্রে, একজন ফ্রান্স ও দু’জন মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। পরে ১১ অক্টোবর রায়হানের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রী মামলা করেন।
ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ঘটনার দুই দিন পর ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রধান অভিযুক্ত আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়।
২০২১ সালের ৫ মে এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। এতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস, এসআই হাসান উদ্দিন ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।
নয়া দিগন্ত
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.