বিয়ানীবাজার পৌরশহরের প্রধান সড়কের দু’পাশ ছিল হকার আর ভারসান ব্যবসায়ীদের দখলে। এই সড়কের দুই পাশের ফুটপাত একদিন আগেও ছিল চলাচলের অনুপযোগী। নিত্যদিন হকাররা ফুটপাতে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসতেন। পণ্য বেচাকেনার কারণে ফুটপাতে মানুষের ভিড় লেগে থাকত। ফুটপাত দখল হওয়ার কারণে পুরো শহরজুড়ে যানজট লেগে থাকতো। সেই শহরের ফুটপাত এখন ফাঁকা। শুক্রবার সকাল থেকে অবৈধ ব্যবসায়ীরা নিজেদের দখল ছেড়ে দেন।
এরপরও এদিন ২টার পর বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর প্রশাসন সড়কের পাশে থাকা দোকানপাটের বর্ধিত অংশ সরিয়ে নিতে অভিযান শুরু করেন। বিকাল ৬টা পর্যন্ত টানা অভিযানে শহরে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফিরে আসে। সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশের সহযোগীতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মুস্তাফা মুন্না অভিযানে নেতৃত্ব দেন। দফায়-দফায় বৃষ্টির বাগড়া উপেক্ষা করে অবৈধ দখলমুক্ত অভিযান পরিচালিত হয়। কয়েকবছর পর উপজেলা প্রশাসনের এমন যুগান্তকারী ভূমিকায় স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও। অভিযানে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফ উজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
পৌর শহরের ফতেহপুর এলাকার বাসিন্দা হাবীবুর রহমান বলেন, ফুটপাত হকারমুক্ত থাকায় ভোগান্তি ও যানজট কমেছে।
বিয়ানীবাজার সবজি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জিয়া উদ্দিন জানান, প্রশাসনের নির্দেশে আমরা আগের দিন থেকে ফুটপাত ছেড়ে দেয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকি।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের থানা এলাকা থেকে দক্ষিণ বাজারের কালভার্ট পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশ দখলে নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ফলে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলাচল করে যেত না। কিছু অসৎ ব্যবসায়ী আবার নিজের দোকানের বাইরে অন্যকে ভাড়া দিতেন। কেউ আবার দোকানের বাইরে পণ্যের পসরা সাজিয়ে রাখতেন।
ফুটপাত হকারমুক্ত রাখার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন উত্তর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, ‘ফুটপাত ফাঁকা হওয়ায় সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে আছে। এতে আমরা ব্যবসায়ীও খুশি। আমরা চাই এই ধারা অব্যাহত থাকুক।’
বিয়ানীবাজার সুজন সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন বলেন, এটা প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। প্রশাসনকে এটা ধরে রাখতে হবে। রাজনৈতিক ও পুলিশ প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।
ফুটপাত হকারমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় সব করা হবে বলে জানিয়েছেন বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফ উজ্জামান। তিনি বলেন, ফুটপাত দিয়ে জনসাধারণ যাতে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারেন, সে বিষয়ে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হবে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে পৌরবাসীকে সচেতন থাকতে হবে। ফুটপাতের অবৈধ দোকান থেকে কাউকে কিছু না করার আহবান জানান তিনি।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.