দ্বিতীয়বারের মতো দেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ডাউনিং স্ট্রিটে এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে চার সপ্তাহের জন্য যুক্তরাজ্যজুড়ে লকডাউনের কথা জানান তিনি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বরিস জনসন বলেন, এবারের ক্রিসমাস ‘বেশ আলাদা’ হতে পারে। কিন্তু তিনি প্রত্যাশা করেন, এই সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া মানে ভবিষ্যতে পরিবারের সবাই একসঙ্গে হতে পারা। লকডাউনে পাব, রেস্তোরাঁ, জিম ও অপ্রয়োজনীয় দোকান-পাট বৃহস্পতিবার থেকে চার সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে প্রথম দফায় লকডাউনের মতো এবার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ না রেখে চাইলে খোলা রাখা যেতে পারে। আগামী ২ ডিসেম্বরের পর এসব কড়াকড়ি শিথিল করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
জনসন বলেন, ‘এ বছরের ক্রিসমাস আলাদা হতে যাচ্ছে, সম্ভবত খুবই আলাদা। কিন্তু আমি আশা ও বিশ্বাস করছি যে, এখন কঠিন পদক্ষেপ নিলে পরবর্তীতে পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে হওয়ার অনুমতি দিতে পারব।’
করোনায় যে হারে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে এতে পরিস্থিতি গত এপ্রিলের চেয়েও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন জনসন। তিনি বলেন, কোনো দায়িত্বশীল প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসে মৃতের এই সংখ্যা উপেক্ষা করতে পারেন না। আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যে হারে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে তাতে সামনের দিনে হাজার হাজার মানুষ মারা যেতে পারেন। মৃতের সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। পরিস্থিতি এপ্রিলের চেয়েও খারাপ হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিমের হাসপাতালগুলোও এখন রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। যেখানে অন্যান্য এলাকার তুলনায় রোগীর সংখ্যা কম।
স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে অংশ নেন জনসন। আগামী সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। দেশটিতে শনিবার ২১ হাজার ৯১৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে বলে বিবিসি জানায়। করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসার ২৮ দিনের মাথায় আরও ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়।
দশ লাখ রোগী শনাক্তে দশ দেশের তালিকায় যুক্তরাজ্যের অবস্থান নবম। আমেরিকা, ভারত, ব্রাজিল, রাশিয়া, ফ্রান্স, স্পেন, আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার পর যুক্তরাজ্যের অবস্থান। যদিও ধারণা করা হচ্ছে শনাক্তের আসল সংখ্যা আরও বেশি। কারণ মহামারির শুরু থেকে ব্যাপক আকারে করোনা পরীক্ষায় ঘাটতি ছিল।