কামরুল হাসান মুন্না: গত ১৮ই মার্চ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে দেশের প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনার মহামারি রোধে সরকার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশও দিয়েছেন।

আগের ঘোষণা অনুযায়ী ১লা অক্টোবর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলার ঘোষণা থাকলেও করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আবার নতুন করে ১৯শে ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এখনও পর্যন্ত মহামারি করোনার না কমার কারনে বন্ধ রয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

আসছে শীত, আবারও হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমন। বিশ্বের সকল দেশের মতো আমাদের বাংলাদেশেও বাড়ছে দানব করোনার প্রকোপ। কবে যে এই মহামারি কমে আসবে আর আবার প্রাণ ফিরে পাবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

দেশের সরকারী বা এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন সরকার প্রদান করলেও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা রয়েছেন খুবই অর্থাভাবে। অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়িয়ে মোটামুটি ভাবে সংসার চালিয়ে গেলেও এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না।

ছাত্র-ছাত্রীদের মাসিক বেতন আর প্রবাসীদের অর্থায়নে এতো দিন চলতে পারলেও এখন স্কুল বন্ধ থাকায় এবং সারা বিশ্বে করোনার মহামারিতে দানশীল প্রবাসীরাও অনেকটা দানবিমুখতা প্রকাশ করতেছেন। যার ফলে মানবতের জীবন যাপনে অনেকটা অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরা।

এসব মানুষ গড়ার কারিগরদের নিকট সংসার, পরিবার, সন্তান-সন্ততী যেন একটা অভিশাপ করে দাঁড় করিয়েছে মহামারি করোনা।

সরকারের পক্ষ থেকে এই মহামারিতে এসব বেসরকারী শিক্ষকদের প্রতি কোন অনুদানের ব্যবস্থা নেই। নেই কোন নির্দিষ্ট নীতিমালা।

বিয়ানীবাজারের বৈরাগীবাজার আদর্শ বিদ্যানিকেতনের একজন শিক্ষক তার সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বললে তিনি বলেন- আমরা বড় অসহায় অবস্থায় আছি। নূন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।

শিক্ষক হওয়ার কারনে পারতেছিনা অন্য কোন কাজ করতে। স্কুল কমিটির লোকজন এতো দিন কোনমতে বেতন দিয়ে আসলেও গত কয়েক মাস থেকে বেতন দিতে পারতেছেন না।

আর পারবেনই বা কেমন করে স্কুলের আয়ের কোন পথই খুলা নেই।

তাই আমরা বাধ্য হয়ে আমাদের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের যারা প্রবাসে অবস্থান করতেছেন বা দেশে প্রতিষ্ঠিত আছেন তাদের কাছে আমাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জন্য কিছু সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতেছি।

শিক্ষকদের আশার বাতি উনাদের সাবেক ছাত্র-ছাত্রী কতটা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারবেন তার দিকেই আছেন উনারা ।

আর যারা সাহায্য করবেন তারা প্রবাসীরাও তো বর্তমানে খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। করোনার মহামারি সবাইকে শারিরীক অর্থনৈতিক নানান ভাবে নাজেহাল করে দিয়েছে ।

দেশের হাজার হাজার বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের কি হবে?

সরকারের কাছে অনুরোধ রইল একটা নির্দিষ্ট নীতিমালা করে এসব অসহায় শিক্ষকদের পাশে এগিয়ে আসতে।

পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে এসব অসহায় শিক্ষকদের অসহায়ত্ব কিছুটা লাগব হবে বলে আশাবাদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *